নাব্যতা কমে যাওয়ায় বাগেরহাটে মোংলা নদী বন্দরে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা ফেরি চলাচল করছে। নদীতে জোয়ারে এলে তবেই ফেরি চলাচল করে, আর ভাটায় বন্ধ থাকে। এ ছাড়া যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জোয়ারের সময়ও প্রায়ই বন্ধ থাকছে ফেরি চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে ওইখানকার ব্যবসায়ী সহ সাধারণ মানুষ। সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে স্থানীয় প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মোংলা নদী পার হওয়ার জন্য যানবাহন গুলোকে কখনও একদিনও অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় যানবাহন ফেরিঘাটে আটকে থাকায় মাছ ও কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক ফেরি চলাচল না করায় বাড়ছে রোগীদের ভোগান্তি।

মোংলা কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, ভাড়া করা ট্রাকে করে খুলনা থেকে মোংলায় মালামাল আনা-নেওয়া করেন তারা। কিন্তু ফেরি পারাপারের জন্য ভোগান্তি পোহাতে হয়। কখনো কখনো ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘাটে অপেক্ষা করতে হয়। এতে অনেক সময় মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। আবার অতিরিক্ত ভাড়াও গুনতে হয়। তিনি আরো বলেন, নাব্যতা কম থাকায় মুমূর্ষু রোগী নিয়ে খুলনা যেতে গেলে অ্যাম্বুলেন্স পার করা যায় না। ফলে নৌকায় করে পার হতে সময়ও বেশি লাগে। পথের মধ্যে রোগীর মৃত্যুও ঘটে।

শহরের মাছ ব্যবসায়ী আফজাল ফরাজি বলেন, মাছ কিনে সেগুলো ট্রাকে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাই। বরফ দিয়ে ঝুড়িতে মাছ সাজিয়ে ট্রাকে তোলার পর ফেরি ঘাটে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এতে মাছের ক্ষতি ও সঠিক সময়ে মোকামগুলোতে মাছ সরবরাহ করতে সমস্যায় পড়তে হয়।

ফেরির পরিচালক সুশান্ত কুমার বলেন, জোয়ারের সময় ফেরি চলে, আর ভাটায় চলাচল করতে পারে না। এ সময় নদীর দুপাড়ে গাড়িগুলো আটকে থাকে পরবর্তী জোয়ারের জন্য। ড্রেজিং করে ঘাটের পল্টুন নদীর ভিতরের দিকে এগিয়ে দিলে সারাক্ষণ ফেরি চলাচল করা সম্ভব হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিপংকর দাশ বলেন, ফেরিটির জন্য এখানকার মানুষের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দিনে-রাতে দুইবার জোয়ারের সময় ফেরি চলাচল করে। নাব্যতা কমে যাওয়ায় এখন খুব কম সময় ফেরি চলাচল করছে। আমি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে কথা বলেছি। মোংলা-ঘাসিয়াখালী চ্যানেলের মোংলা নদীর অংশে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। আমি যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি, যাতে ফেরি ঘাট সংলগ্ন চরটুকু কেটে নাব্যতা বাড়ানো যায়।

পিডিএস/এস