লিটন খান, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)

  ২৭ নভেম্বর, ২০২৩

চিকিৎসার ভুল মৃত্যু

‘অজ্ঞানে’ প্রাণ গেল ব্যবসায়ি তাপসের

ব্যবসায়ি তাপস চন্দ্র দাস (৩৫)। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের পিত্তথলি পাথরের অপারেশনের আগে অজ্ঞান করার পর আর জ্ঞান না ফেরায় ইন্টারনেট ব্যবসায়ি তাপস চন্দ্র দাসের (৩৫) মৃত্যু হয়েছে।রবিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার কোতোয়ালী থানার মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হসপিটালে এ ঘটনা ঘটে।

চিকিৎসার ভুলে তাপসের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছ তার পরিবার। অনভিজ্ঞ চিকিৎসা সহকারী দিয়ে অজ্ঞান করা ও ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে’ তাকে অস্ত্রোপচার কক্ষে (অপারেশন থিয়েটার) নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের দাবি।

তাপস চন্দ্র দাস ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা পূর্বপাড়া এলাকার মৃত জিতিশ চন্দ্র দাসের ছোট ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসার পাশাপাশি মৈত্রী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।


  • সন্ধ্যায় ওটিতে নিয়ে রাত ৮টায় বের হয়নি তাপস, পরে আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ কর্তৃপক্ষ।
  • অনভিজ্ঞ চিকিৎসা সহকারী দিয়ে অজ্ঞান ও অস্ত্রোপচারেরই টেবিলেই মৃত্যুর অভিযোগ পরিবারের।

তাপসের শাশুরি ঝর্ণা রানী সরকার বলেন, ‘রবিবার বিকেলে পিত্তথলি পাথরের অপারেশনের জন্য আমার মেয়ের জামাইকে হাসপাতালে ভর্তি করি। সন্ধ্যার দিকে তাকে ওটিতে নেওয়ার পর রাত ৮টা নাগাদ বের করেনি। পরে আমরা জানতে চাইলে, তাকে আইসিইউতে (নিবির পরিচর্যা কেন্দ্র) ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ততক্ষণে তপস মারা গেছেন।’

তাপসের স্ত্রী সুমনা সরকার বলেন, ‘ভূয়া অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তারের মাধ্যমে আমার স্বামীকে অজ্ঞান করে আর জ্ঞান ফেরাতে পারেনি। ওটির টেবিলেই তাকে হত্যা করেছে। এটা নির্ঘাত হত্যাকাণ্ড। আমরা এর বিচার চাই।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হসপিটালে অনভিজ্ঞ ওটি বয় ও পিয়ন দিয়ে অজ্ঞান করার ফলে এর আগে একাধিকবার রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

জানতে চাইলে মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল হক জুয়েল বলেন, ‘দুর্ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা নেই। অভিজ্ঞ অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার দিয়েই রোগীকে অজ্ঞান করেই সার্জন অপারেশন করেছেন। এই রোগীর (তাপস) ক্ষেত্রে অজ্ঞান করার পর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি।’

হাসপাতালে তাপসের শরীরে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব সার্জিকাল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার খন্দকার আব্দুল্লাহ আল হাছান। তিনি বলেন, ‘অপারেশন ভালো হয়েছে। পরে আমি পোস্ট অপারেটিভ প্লান দিয়ে ওটি থেকে বের হয়ে আসি। তবে রোগীর জ্ঞান কেন ফেরেনি, সেটা আমি বলতে পারব না, এটি অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তারের কাজ।’

কোতয়ালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাপসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবার আইনগত ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঢাকা,কেরানীগঞ্জ,চিকিৎসার ভুলে মৃত্যু
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close