এম এ সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ২৩ মার্চ, ২০২৩

ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে খেত, বড় ক্ষতির শঙ্কায় আমতলীর তরমুজচাষিরা

বরগুনার আমতলীতে তরমুজখেত। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

বরগুনার আমতলীতে চার দিনের ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তরমুজখেত। এ ছাড়া কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে তরমুজের। এতে গাছ ও ফলন পচে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন অধিকাংশ চাষি। ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

আবহাওয়া অফিস বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় বিভিন্ন অঞ্চলে আরো কয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাত আর ঝড়ো-বাতাসের প্রভাব থাকতে পারে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমতলীতে চলতি বছর ৬ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এই আবাদ গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। কিছু এলাকায় আগাম জাতের তরমুজ চাষ হওয়ায় জমি থেকে বিক্রিও শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ চাষির তরমুজ বিক্রির উপযোগী হবে। এই সময়ে চার দিনের বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন তরমুজচাষিরা। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক তরমুজখেত। বৃষ্টি আরও কয়েক দিন স্থায়িত্ব হলে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

উপজেলার কয়েকটি তরমুজখেতে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে তরমুজখেতগুলো তলিয়ে গেছে। অনেক খেতে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। অনেক এলাকায় বৃষ্টির সঙ্গে শিলা পড়ার কারণে তরমুজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক স্থানে চাষিরা তাদের খেতে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের কাজ করছেন।

উপজেলার হলদিয়ার টেপুরা গ্রামের কৃষক মো. আবু সালেহ বলেন, চলতি মৌসুমে তরমুজ চাষ করে ফলনও ভালো হয়েছে। হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টির কারণে পানিতে খেত তলিয়ে গেছে। এতে কারণে বেশ দুশ্চিন্তায় আছি। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ভুক্তভোগী তরমুজচাষিদের পথে বসে যেতে হবে এবং কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আঠারো গাছিয়ার তরমুজচাষি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ভারী বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টির কারণে তরমুজখেত তলিয়ে গেছে। গতকাল রাতে সেচ দিয়ে খেতের পানি নিষ্কাশন করেছি। পরে আরেক দফা আবার বৃষ্টি হয়ে অতিরিক্ত পানি জমে আছে তরমুজখেতে। এতে গাছ ও তরমুজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিভিন্ন মাধ্যমে সেচ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছি।

খেপুপাড়া আবহাওয়া অফিসের একটি সূত্র জানায়, অফিসের মেঘের মানচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে উপকূলীয় বিভিন্ন অঞ্চলে আগামী কয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাত আর ঝড়ো-বাতাসের প্রভাব থাকতে পারে। তবে দ্রুত আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। নিম্নচাপের প্রভাবে চলমান এই বৃষ্টিপাত থাকতে পারে আরো কয়েক দিন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সি এম রেজাউল করিম বলেন, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু চার দিনের অব্যাহত মুষলধারে বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টিতে তরমুজখেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খেতগুলোতে পানি জমে থাকায় কৃষকরা আতঙ্কে রয়েছে। আমাদের কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা মাঠে থেকে কাজ করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা করছেন। তবে দ্রুত খেত থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় গাছ ও ফল দুটোই পচে নষ্ট হয়ে যাবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বরগুনার আমতলী,ভারী বৃষ্টি,তরমুজচাষি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close