তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :
শততম মৃত্যুবার্ষিকী
কবি হাসন রাজার মাজার জিয়ারত করলেন সুনামগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক
![](/assets/news_photos/2022/12/06/image-368940.jpg)
মরমী কবি দেওয়ান হাসন রাজার শততম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মাজার জিয়ারত করেছেন সুনামগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে কবির মাজার জিয়ারত করেন তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার সিংহ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ. কে. এম. আব্দুল্লাহ বিন রশিদ, হাসন রাজার প্রপৌত্র ও হাসন রাজা পরিষদের সভাপতি হাসন গবেষক সামারিন দেওয়ান, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, প্র-প্রপৌত্র ও হাসন রাজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান তাছাদ্দুক রাজা ইমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক আশিকুর রহমান পীর, দিলাল আহমদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মরমী সাধক হাসন রাজা ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ ১২৬১) তৎকালীন সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীরবর্তি লক্ষণছিরি (লক্ষণশ্রী) পরগণার তেঘরিয়া গ্রামের এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। হাসন রাজা তার চতুর্থ সন্তান।
আলী রাজা তার খালাতো ভাই আমির বখ্শ চৌধুরীর নিঃসন্তান বিধবা স্ত্রী হুরমত জাহান বিবিকে পরিণত বয়সে বিয়ে করেন। হুরমত জাহান বিবির গর্ভেই হাসন রাজার জন্ম। হাসনের পিতা দেওয়ান আলী রাজা তার অপূর্ব সুন্দর বৈমাত্রেয় ভাই দেওয়ান ওবেদুর রাজার পরামর্শ অনুযায়ী তারই নামের আকারে তার নামকরণ করেন অহিদুর রাজা।
হাছন রাজার পূর্বপুরুষেরা হিন্দু ছিলেন। তাদেরই একজন বীরেন্দ্রচন্দ্র সিংহদেব মতান্তরে বাবু রায় চৌধুরী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। হাসন রাজার পূর্বপুরুষের আদিবাস ছিল ভারতের অয্যোধ্যায়। সিলেটে আসার আগে তারা দক্ষিণবঙ্গের যশোর জেলার কাগদি নামক গ্রামের অধিবাসী ছিলেন।
ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার কোণাউরা গ্রামে তার পূর্ব পুরুষ বিজয় সিংহ দেব বসতি শুরু করেন, পরে কোনো এক সময় বিজয় সিংহ কোণাউরা গ্রাম ত্যাগ করে একই এলাকায় নতুন আরেকটি গ্রামের গোড়াপত্তন করেন এবং তার বংশের আদি পুরুষ রামচন্দ্র সিংহ দেবের নামের প্রথমাংশ “রাম” যোগ করে নামকরণ করেন রামপাশা।
হাসন রাজার বাল্যকালে সিলেটে তখন আরবি-ফার্সির চর্চা খুব প্রবল ছিল। সিলেটে ডেপুটি কমিশনার অফিসের নাজির আব্দুল্লাহ নামক এক বিখ্যাত ফার্সি ভাষাভিজ্ঞ ব্যাক্তির পরামর্শ মতেই তার নামকরণ করা হয় হাসন রাজা। বহু দলিল দস্তাবেজে হাসন রাজা আরবি অক্ষরে নাম দস্তখত করেছেন। হাসন দেখতে সুদর্শন ছিলেন। "বহু লোকের মধ্যে চোখে পড়ে তেমনি সৌম্যদর্শন ছিলেন। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে তিনি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেননি। তবে তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত। তিনি সহজ-সরল সুরে আঞ্চলিক ভাষায় প্রায় সহস্রাধিক গান রচনা করেন।
১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মরমী এই সাধক পুরুষ পরলোক গমন করেন।
পিডিএস/এএমকে