সাদমান সময়, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)

  ০৬ ডিসেম্বর, ২০২২

সৈদালী গণহত্যা ২৩ শহিদকে একই জায়গায় সমাহিত 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সৈদালী গ্রাম গণহত্যায় নিহত ২৩ জন শহিদকে একস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে ২০ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সৈদালী গ্রামে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। ওইদিন তারা বহু ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। গ্রামে কয়েকজন নারীও সেদিন ধর্ষনের স্বীকার হন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর হলেও মিরসরাই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব গণকবর চিহ্নিত করে তাদের একস্থানে সমাহিত করা হয়। সরকারের তরফ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাদের নামফলকযুক্ত স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের।

এরা হলেন সৈদালী গ্রামের মোখলেছুর রহমান, আবুল কালাম (হোরা মিয়া), আমির হোসেন, খোরশেদ আলম, মকছুদ আহম্মদ, নজীর আহমদ, সুলতান আহমদ, কবির উদ্দিন, শেখ আহমদ, আবদুল মালেক, তমিজ উদ্দিন, হাকিম বক্স, বেদন আলী, সামছুল আলম ভূইয়া, নুরুল আলম ভূইয়া, ফকির আহমদ, রহিম বক্স, আব্দুর রশিদ, মফিজুর রহমান, হোসনের জামান, জোবেদা খাতুন, জায়েদ আলী, ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ বজলুর রহমান।

ইউএনও মিনহাজুর রহমান জানান, সংবাদপত্র এবং সৈদালী নাগরিক ফোরাম নামে গ্রামের একটি সংগঠনের মাধ্যমে সৈদালীতে অরক্ষিত গণকবর থাকার বিষয়টি জেনে তা একসাথে সমাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথমে তাদের দেহাবশেষ উত্তোলন এবং নতুন করে কবর দেওয়ার বিষয়টি শরিয়াসম্মত করতে কিছু কাজ করতে হয়েছে। সরকারি জমির ওপর কবর দেওয়ার জায়গা ঠিক করা হয়। কবরস্থানে যাওয়ার পথ তৈরি করতে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে দুই শতক জমি ক্রয় করা হয়।

মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কবর সমাহিত করার কাজটি করা হলো। পরবর্তীতে আমরা আমাদের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পরামর্শে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে পাঠাবো।’

এদিকে ২০১৭ সাল থেকে সৈদালী নাগরিক ফোরাম নামে একটি সংগঠন ২০ এপ্রিল দিনটিকে সৈদালী গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। মূলত সংগঠনটির নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতেই সবগুলো কবর একসাথে সমাহিত করার উদ্যোগ নেয় সরকার।

সংগঠনটির সভাপতি নাট্য নির্দেশক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ‘১৯৭১ সালে ২০ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সৈদালী গ্রামের নির্বিচারে নিরস্ত্র বাঙালির উপর হামলা চালায়। ওই দিন পাকিস্তানি জান্তারা ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালান। এছাড়া গ্রামে কয়েকজন নারীও সেদিন ধর্ষনের স্বীকার হোন।’ ‘২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর সংবাদপত্রে সৈদালী গণহত্যা দিবসের নৃশংস ঘটনা তুলে ধরার প্রেক্ষিতে সরকার এমন উদ্যোগ নিলো। এজন্য জাতীয় পত্রিকাগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’ এসময় তিনি আরো বলেন, ‘মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছে। তাঁকেও আমরা ধন্যবাদ দিতে চাই।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সৈদালী,শহিদ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close