সোহেল রানা, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা)

  ৩০ নভেম্বর, ২০২২

২০ গ্রামের ভরসা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের জাফর গ্রামে মচ্চ নদীর আমবাগান ঘাটে সাঁকো। ছবি মঙ্গলবার তোলা - সোহেল রানা

পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া জাফর গ্রাম। এই গ্রামের প্রান্তে মচ্চ নদীর আমবাগান ঘাটে বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকোই এখানে ২০টি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা।

এখানে একটি সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। বাঁশের সাঁকো, বৃষ্টি বাদলা ও বন্যায় নড়বড়ে হয়ে যায়। শুরু হয় ভোগান্তি। সেতুর অভাবে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। এলাকাবাসীর দাবি, এখানে একটি স্থায়ী সেতু হলে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াত, কৃষকদের ফসল আনা নেওয়া, অসুস্থ্য রোগীদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের সীমানা দিয়ে ঘেঁষে যাওয়া প্রায় ৫০-৬০ বছরের পুরানো এই আমবাগান মচ্চ নদীর ঘাট। প্রায় ৬০ বছরের পুরানো ঘাট দিয়ে উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের জাফর, মুংলিশপুর, পালপাড়া, শীলপাড়া, গনকপাড়া, হাসানখোর, রামচন্দ্রপুর, জাইতরসহ অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ ওপারে হোসেনপুর ইউনিয়ন ও দূর-দূরান্তে চলাচল করে থাকেন। ভোগান্তির যেন শেষ নেই দৈনন্দিন যাতায়াতকারীদের। আমবাগান মচ্চ নদীর ঘাট এলাকায় কোন উন্নতি হয়নি। শুকনো বা খড়া মৌসুমে গ্রামবাসীদের তৈরি করা বাঁশের সাঁকো দিয়েই লোকজন চলাচল করেন। বর্ষা মৌসুমে তাদের একমাত্র ভরসা নৌকা।

এই সাঁকো দিয়েই ছাত্রছাত্রীরা পার্শ্ববর্তী ঘোড়াঘাট উপজেলার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে দেখা যায়। কেউ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার জীবন নির্ভর করে সময়ের উপর। অনেক সময়ই এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। আর বর্ষা মৌসুমে ভরা নদীর পানিতে নৌকা পারাপার দুঃসাধ্য হয়ে যায়। একটি সেতু অভাবে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এ ভোগান্তি। সাধারণ মানুষের দাবি মচ্চ নদীর আমবাগান ঘাটের মত এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একটি সেতু নির্মাণ হলে অল্প সময়ে পলাশবাড়ী-ঘোড়াঘাট ও অন্যান্য এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে।

ওই এলাকার কৃষক আ. রশিদ মিয়া, সমাজসেবক খলিলুর রহমান ও মুছা মিয়া বলেন, খড়া বা বর্ষা যাই বলি ঘাটটি দিয়ে চলাচলে অনেক সমস্যা পোহাতে হয়। একটি সেতু এখানে খুব প্রয়োজন। প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সেতু নির্মাণের আবেদন জানান তারা। পলাশবাড়ী উপজেলার মুংলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তোতা মিয়া বলেন, আমরা এই ঘাট হয়েই হাট বাজারে গিয়ে থাকি। এই ঘাটটি দিয়ে চলাচলে আমাদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়।

পলাশবাড়ী উপজেলার জাফর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই ঘাট হয়েই বিদ্যালয়ে যাতায়াত করি। বর্ষা ও শুকনো মৌসুম যাই বলুন না কেন, যাতায়াতে খুব সমস্যা। এখানে একটি ব্রিজ জরুরীভাবে প্রয়োজন।

কিশোরগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান অবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ব্রিজ হলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, মানুষজনের ব্যবসা বাণিজ্য ও কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রসার ঘটবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

পলাশবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী শাহরিয়ার বলেন, ওই জায়গায় ব্রিজের প্রস্তাবনা অনুমোদন হয়েছে এবং সয়েল টেস্ট করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন বলেন, এটি গুরুত্বপূর্ন একটি ঘাট। এটি প্রকল্পে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে, ওখানে ব্রিজ নির্মাণ হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পলাশবাড়ী,কিশোরগাড়ী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close