অলিউজ্জামান রুবেল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

  ২৯ নভেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে উপকারভোগীদের স্বস্তি

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরে ভাগোলপুর দখিনা পুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে সুখ ফিরেছে উপকারভোগীদের। বাসিন্দাদের কেউ বসবাস করতেন রেলস্টেশন বস্তিতে, কেউ অন্যের জায়গায় বা সরকারি খাসজমিতে। তাদের ছিল না কোনো স্থায়ী ঠিকানা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক উদ্যোগ আশ্রয়ণ প্রকল্প-১ এর ঘর পেয়ে তারা এখন স্বাচ্ছন্দেই বসবাস করছেন। পাশাপাশি বাড়ির আশপাশে কেউ সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, কেউবা করছেন ছাগল ভেড়া পালন।

ভাগোলপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, মাথাগোঁজার নিজস্ব ঠিকানা পেয়ে অনেকেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। পাশাপাশি বদলে ফেলছেন জীবনের পথ। এই ঘর অনেকেরই জীবন পাল্টে দিয়েছে।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়েছেন প্রথম পর্যায়ে ১৩১৯, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৬১৯, তৃতীয় পর্যায়ে ৬৫১ এবং চতুর্থ পর্যায়ে ২৩০টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে।

ভাগোলপুর দখিনা পুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে কৃতজ্ঞ উপকারভোগী হানিফ উদ্দিনের স্ত্রী উম্মে হাবিবা সুলতানা, তপন কর্মকারের স্ত্রী অলকা রানী জানান, দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে এখানে সুন্দরভাবে বসবাস করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা বিশেষভাবে ঋণী। আমরা আগে রেলস্টেশনের বস্তিতে থাকতাম যেখানে কোন জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। তাছাড়া বাড়িতে কোন বিদ্যুৎ ছিল না। যে কোন সময় উচ্ছেদ অভিযানের ভয়ে দিন কাটাতাম। কিন্তু এখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করছি। বসবাসের পাশাপাশি কেউ হাঁস-মুরগি, কেউ ছাগল ভেড়া পালন, বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছি। এ বিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা খাতুন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যে এরকম একটি মহৎ কাজের সাথে আমাদের কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ফেজের উপকারভোগীদের নিয়মিত খোঁজ রাখি। উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ঈদ ও পূজাসহ বিভিন্ন দিবসে আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করি।

জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভুক্তমূলক উন্নয়নের আওতায় এনেছেন। সমাজের অনগ্রসর পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীকে ২ শতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা একক ঘর প্রদান করা হচ্ছে। জমিসহ ঘরের মালিকানা পেয়ে তারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করেছেন। ফলে এসব পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নততর হচ্ছে। উন্নয়নের মূলধারায় নারীদের সম্পৃক্ত করা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণে আশ্রয়ণের বাড়ি ও জমির মালিকানা স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হচ্ছে। পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের উৎপাদনমুখী নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সঞ্চয়ী হতেও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি আও বলেন, রহনপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ভাগোলপুর দখিনা পুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে উপকারভোগীরা সেখানে নিজস্ব ঘরে বসবাস করছেন। সরেজমিনে উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি, ঘর পেয়ে তারা সবাই খুশি। তাদের প্রাপ্ত ঘরের বাইরেও আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় পতিত জমিতে কেউ করছেন হাঁস মুরগি, কেউ ছাগল পালন, বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষসহ বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ করছে। আমরা তাদের বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশনসহ বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করেই যাচ্ছি যা আগামীতে অব্যাহত থাকবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উপকারভোগী,প্রধানমন্ত্রী,উপহার,চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close