বেড়া-সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি

  ২৪ অক্টোবর, ২০২২

নিষেধাজ্ঞাকালে ইলিশ শিকার : অনুমতি দিয়ে নৌ পুলিশ সদস্য ধরা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

পাবনার বেড়ায় নিষেধাজ্ঞার মাঝেই উৎকোচের বিনিময়ে জেলেদের মা ইলিশ মাছ শিকারের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে নগরবাড়ি ফাঁড়ির নৌ পুলিশের কনস্টেবল মো. লাইজুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার লাইজুকে প্রত্যাহার করে সদর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়। নগরবাড়ী ফাঁড়ির নৌ পুলিশের ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শরিফুল ইসলাম জানান, গত ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টেবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ আহরণ,পরিবহন, মজুদ বাজারজাতকরণ ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ ঘোষণা করেছে সরকার। সারাদেশে নৌ পুলিশ সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নদীপথে অভিযান পরিচালনা করছে। কনস্টেবল লাইজু জেলেদের মাছ ধরার সুযোগ করে দেয়া এবং অভিযানের তথ্য আগাম জানিয়ে দেওয়ার জন্য অসাধু জেলেদের সাথে চুক্তি করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে রবিবার ‘প্রতিদিনের সংবাদ’ পত্রিকায় ‘বেড়ায় টাকা দিলে মেলে ইলিশ ধরার অনুমতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই নৌ-পুলিশের উৎকোচ চাওয়ার একটি গোপন ভিডিও রেকর্ড করেন এ প্রতিবেদক। এ ঘটনায় রবিবারই নৌ সদর দপ্তর কনস্টেবল লাইজুকে নগরবাড়ী নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দেয়। একই সাথে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সদর দপ্তরে তলব করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ইলিশ শিকার নিষিদ্ধকালে সরকার দেশের বিভিন্ন এলাকার জেলেদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিকল্প কর্মসংস্থান ও খাদ্য সহায়তা দিলেও বেড়া উপজেলার জেলেদের জন্য কোনো বরাদ্দ ছিল না। সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে অনেক জেলেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ ধরতে নদীতে নামছেন। জেলেদের অসহায়ত্বের সুযোগে একটি দালাল চক্র মাছ ধরার অনুমতি নিতে নৌ-পুলিশকে ম্যানেজ করার জন্য ৪ থেকে ৫ হাজার করে টাকা চাঁদা আদায় করছে। আর নৌ পুলিশের পক্ষে এসব চাঁদাবাজি সমন্বয় করছিলেন কনস্টেবল লাইজু।

এ প্রতিবেদেকের অনুসন্ধানে কনস্টেবল লাইজুর চাঁদাবাজির প্রমাণ মেলে। জেলেদের ইলিশ মাছ ধরার সুযোগ করে দেয়ার বিনিময়ে নৌকাপ্রতি ৬ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন লাইজু। জেলেদের ছদ্মবেশে সে কথাপোকথনের ভিডিও গোপনে ধারণ করেন এ প্রতিবেদক। রবিবার এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়। রবিবার দুপুরে কনস্টেবল লাইজুকে প্রত্যাহার করা হয়।

তবে, এ ঘটনায় ইলিশ শিকার বিরোধী অভিযানে কোন প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা. সবুর আলী । তিনি জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের শুরু থেকেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। নৌ পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় থানা পুলিশও সক্রিয় রয়েছে। প্রশাসন কিংবা আইনশৃংখলা বাহিনীর কেউ অনিয়মে যুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাবনা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close