চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০২ অক্টোবর, ২০২২

চিলমারীতে এনডিপি প্রকল্পে অনিয়ম

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি) সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তালিকায় হয়েছে স্বজনপ্রতি এছাড়া রয়েছে ধনী ব্যক্তিরও নাম। ভেস্তে যাচ্ছে প্রকল্পের উদ্দেশ্য। সুবিধাভোগীদের বোকা বানিয়ে ধোঁকা দিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। নিম্নমানের সামগ্রী পেয়ে হতাশায় সুবিধাভোগী।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নয়ারহাট, অষ্টমীর চর, রমনা ও চিলমারী ইউনিয়নের বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠীর বন্যা মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এনডিপি সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এই সংস্থার বাস্তবায়নে বিভিন্ন প্রকল্পের অধিনে আর্থিক সহায়তা করেন ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত জাতিসংঘ ফ্রেময়োর্ক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি তহবিল যা Green Climate Fund (GCF) নামে পরিচিত। উক্ত প্রোগ্রাম বা প্রকল্পের অধিনে কয়েক হাজার পরিবারের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বসতভিটা উঁচুকরণ, মাঁচাবিশিষ্ট ছাগলের ঘর বিতরণ, নলকূপ স্থাপন, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা স্থাপন, উচ্চমূল্যের কৃষি সম্প্রসারণ ও ঋণ সহায়তাসহ ৬টি প্রকল্প ও প্রশিক্ষণ মধ্য দিয়ে কাজ শুরু করে। শুরু থেকেই দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ আশ্রয় নেয় অনিয়ম ও দুর্নীতির।

সরেজমিনে জানা গেছে, ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি) প্রকল্পের অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ। বসতবাড়ি উঁচুকরণ, নলকূপ স্থাপণ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা স্থাপনসহ ৬ টি প্রকল্পে নেওয়া হয়েছে অনিয়মের আশ্রয়। ছাগলের ঘর বিতরনেও করা হয়েছে ব্যাপক দুর্নীতি। তালিকায় রয়েছে অনিয়ম। দারিদ্র ও অতিদরিদ্র পরিবারকে দেওয়ার কথা থাকলেও বসতভিটা উঁচুকারন, ছাগলের ঘর, পায়খানা স্থাপনও হয়েছে ধনী ব্যক্তির বাড়িতে।

চিলমারী ইউনিয়নের ছাগলের ঘর পাওয়া সুবিধাভোগী মর্জিনা, জাবিতনসহ অনেকে জানান, তারা ছাগলের ঘর পেয়েছেন তবে কাঠ আনতে ভাড়া দেয়া লেগেছে এছাড়াও কাঠ ও ঢেউটিন খুবই নিম্নমানের। একই কথা বলেন অন্যান্য ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, নলকূপ ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা স্থাপণের নেওয়া হয়েছে অনিয়ম আর দুর্নীতির আশ্রয়। শুধু তাই নয় বসতবাড়ি উঁচুকরনেও অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে সংস্থাটি। মাটি ভরাট কাজে ব্যবহার করা হয়েছে অবৈধ্য ড্রেজার। শ্রমিক না নিয়ে ড্রেজার দিয়ে করা হয়েছে বসতভিটা উঁচুকরণের কাজ। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা স্থাপনে অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু পরিবারের কাছে ৫ হাজার করে নিলেও মাসের পর মাস কেটে গেলেও সুবিধাভোগীদের বাড়িতে স্থাপন করা হয়নি পায়খানা। এমনই অভিযোগ তাদের।

রমনা মডেল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা বলেন, কোথায় কীভাবে এবং কাকে কাকে দেওয়া হয়েছে, তা আমার জানা নেই। এছাড়া সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান এনডিপির কাজে অনিয়ম আছে স্বীকার করে বলেন, ‘তারা তো বিষয়গুলো আমাদের জানায় না এবং কত টাকা বাজেট সেটিও প্রকাশ করেন না।’

এদিকে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ছাগলের ঘর, পায়খানা নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে সুবিধাভোগীরা বলেন, ‘কাজে মান নিয়ে দায়িত্বে থাকা সাইদুর ভাইকে বলেছিলাম তিনি রাগ করেছেন এবং বলেছেন ফ্রী পান তো তাই এতো কথা, তাই ভয়ে আর কিছু বলি নাই।’

তালিকা দিতে অস্বিকার করে দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. হাবিবুর রশিদ বলেন, ‘উপর থেকে তালিকা দেওয়া নিষেধ আছে। আমরা সঠিকভাবে করেছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথার পর তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অনিয়ম,চিলমারী,এনডিপি,প্রকল্প
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close