মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

চট্টগ্রামে ই-পাসপোর্টে ঝুঁকছেন সেবাপ্রার্থীরা

চট্টগ্রাম পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে সেবাপ্রত্যাশীদের বক্তব্য শুনে সমাধান দেন পরিচালক মো. আবু সাইদ। ছবি সম্প্রতি তোলা - প্রতিদিনের সংবাদ

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে সেবাগ্রহীতাদের সুবিধার্থে অফিস ভবন সম্প্রসারণ এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুততর করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অন্যান্য দেশের সঙ্গে খাপখাইয়ে নিতে বাংলাদেশও এখন ই-পাসপোর্ট (ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট) এর দিকে এগোচ্ছে। আবেদনকারীরা যাতে পাসপোর্ট ও ভিসাসেবা সহজে গ্রহণ করতে পারেন; সেদিকে দৃষ্টি রেখেই নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের মনসুরাবাদ কার্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সেবাপ্রত্যাশীদের সেবা সহজীকরণে নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। অফিসের ভবনের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। অফিস আঙিনায় খোলা স্থানে টিভি মনিটর স্থাপন করে পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত তথ্যাবলি প্রচার করা হচ্ছে।

বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১২ লাখ ৮৪ হাজার ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে; যা আবেদনের ৯৮ দশমিক ৭৭ ভাগ। পাসপোর্ট ও ভিসা থেকে রাজস্ব আয়ও হয়েছে আশানুরূপ।

এক হিসেবে দেখা যায়, ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস চট্টগ্রামে ২ লাখ ২৪ হাজার ৬৪৫টি ই-পাসপোর্টের আবেদন জমা হয়। এ থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১৪২ কোটি ৬৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এ সময় আবেদনসমূহের অধিকাংশই অর্থাৎ ২ লাখ ১৭ হাজার ৩২৬টি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম অফিসে ৬০ হাজার ৩৪২টি ভিসার আবেদন থেকে ২৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৪ হাজার ৩৭০ টাকার রাজস্ব আয় হয়। এসব ভিসা আবেদনের মধ্যে ৫৭ হাজার ৫৭২টি ভিসা ইস্যু করা হয়।

প্রতি কর্মদিবসে অফিস চলাকালে নিজ কক্ষে পাসপোর্ট ও ভিসা প্রার্থীদের যেকোনো সমস্যার কথা শোনেন ও সমাধান দেন বিভাগীয় পরিচালক মো. আবু সাইদ। সেবাপ্রার্থীদের কাছে এজন্য তার সুনামও রয়েছে।

আবেদনকারীদের জন্য কী কী সুবিধা নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় কী আছে- জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মো. আবু সাইদ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘সেবাপ্রার্থীদের সুবিধার্থে ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে বর্তমান অফিস ভবনটির ওপরের তলা সম্প্রসারণের কাজ চলমান। ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে আশা করছি। ভবনে লিফট স্থাপনের কাজটিও প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া অফিস ভবনের কক্ষসমূহকে অভ্যন্তরীণ নকশায় মানসম্পন্ন করা হয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল সিভিল ও স্যানিটারি কাজেরও সংস্কার করা হয়েছে।’

পরিচালক আবু সাইদ পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের সেবা সহজীকরণে সাম্প্রতিককালে আরো কিছু নতুন কার্যক্রম চালুর কথা জানালেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সেবা নির্দেশনা বোর্ড স্থাপন, সিটিজেন চার্টার হালনাগাদকরণ, পূরণকৃত নমুনা ফরম প্রদর্শনসহ অফিস আঙিনায় খোলা স্থানে টিভি মনিটরের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কিত তথ্য প্রচার। এ ছাড়া পাসপোর্ট করতে আসা ব্যক্তিদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে এ-সংক্রান্ত যাবতীয় পরামর্শ কেন্দ্র। শিগগিরই পাসপোর্ট করতে কী কী কাগজপত্র ও ফি প্রযোজ্য; তার নিয়মাবলি ও নির্দেশনা সংবলিত একটি ‘ই-পাসপোর্ট সহায়িকা’ প্রস্তুত ও বিতরণের ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন।

এক তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১০ সাল থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে অর্থাৎ ১২ বছরে ১০ লাখ ১৪ হাজার ৭৬০টি এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) পাসপোর্ট আবেদন থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস রাজস্ব আয় করেছে ৩৯১ কোটি ৪১ লাখ ৯৯ হাজার ৭২ টাকা। একই সময়ে এসব আবেদনের মধ্যে ১০ লাখ ৮ হাজার ৬১৭টি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাসপোর্ট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close