reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ মে, ২০২৪

পল্লীবিদ্যুতের ভৌতিক বিল

জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক

যিনি পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকই নন, অথচ তাকে বলা হলো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে! তাও ১ বা ২ নয়, ৬ মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল। এমন বিল দেখলে যে কারো চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। চোখ কপালে উঠেছে কুড়িগ্রামের এক দিনমজুরেরও।

প্রতিদিনের সংবাদে গতকাল বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে হবির আলী। পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। বাড়িতে তার নামে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ বা মিটার না থাকলেও হবিরের নামে ৬ মাসের বকেয়া বাবদ ১ হাজার ৯৫১ টাকা দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিস দিয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিস। শুধু তা-ই নয়, নোটিস পাওয়ার পর অতিসত্বর বিল পরিশোধ না করলে ওই দিনমজুরের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। পল্লীবিদ্যুতের এই তুঘলকিকাণ্ডে বিপদে পড়েছেন ভুক্তভোগী ওই গরিব মানুষটি। একই এলাকার খোকন মিয়া নামের অন্য এক ব্যক্তির নামেও কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা সত্ত্বেও গ্রাহকের সংযোগ হিসাব ৯৯৭/১৬৬০ দেখিয়ে ৮ হাজার ৮৪৬ টাকা বকেয়া দেখানো হয়েছে। শুধু হবির বা খোকন নয়, এমন ভৌতিক বিল দেখলে যে কারোই ভিড়মি খাওয়ার কথা!

বলা বাহুল্য, পল্লীবিদ্যুতের বিলের এ ধরনের সমস্যা নতুন নয়। এমন আরো অভিযোগ রয়েছে- মিটার রিডার নিয়মিত মিটার রিডিং দেখেন না বা বাড়িতে না এসে ইচ্ছামতো বিলের ইউনিট বসান। এ ক্ষেত্রে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য ওই অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে যায়। সেই কঠিন দায়ই বছরের পর বছর বয়ে বেড়াচ্ছেন অগণিত গ্রাহক। অনেক গ্রাহক আছেন, যারা পড়াশোনা জানেন না। মিটারের রিডিং দেখা বোঝেনও না। এ অবস্থায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। ভৌতিক বিদ্যুৎ বা অতিরিক্ত বিলের পাশাপাশি রয়েছে বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক রকমের কম আসার ঘটনাও। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বিল করার সময় পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের আরো সচেতন হওয়া দরকার বলে আমরা মনে করি। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, বিদ্যুৎ সংযোগের নামে অর্থ আদায়, বারবার মিটার পরিবর্তন করে গ্রাহকদের হয়রানি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং গ্রাহকদের সামান্য বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করাসহ নানা অভিযোগের কথা এর আগে সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে।

একটি সেবা সংস্থার বিরুদ্ধে এতসব অভিযোগ মেনে নেওয়া যায় না। একজনের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা সত্ত্বেও তার বাড়িতে বিদ্যুতের বিল পাঠানো হয় কীভাবে আমাদের তা বোধগম্য নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পল্লীবিদ্যুতের এমন গাফিলতিতে হয়রানির শিকার হন সাধারণ মানুষ, যা মোটেই কাম্য নয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close