reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ মে, ২০২৪

সম্পাদকীয়

ইরানি প্রেসিডেন্টের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকাহত

মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান। গত রবিবার সন্ধ্যায় সীমান্তবর্তী প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজান থেকে ইরানের তাবরিজে ফেরার পথে পাহাড়ি এলাকায় বৈরী আবহাওয়ায় তাদের বহনকারী কপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে। গত সোমবার তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মৃত্যুতে পাঁচ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শোক জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা।

আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুদেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করে হেলিকপ্টারে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন তিনি। তার হেলিকপ্টারে সহযাত্রী ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহতের ঘটনায় স্বভাবতই ইরান জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দেশটির জনগণকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ইরানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর খবরে ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশসহ লেবানন, আরব আমিরাত, ওমান, জর্ডান, কাতার, কুয়েত, ইয়েমেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ইরাক, ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, আর্মেনিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার পর ইরানের মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক হয়েছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি অন্তর্ঘাতমূলক হামলা, তা স্পষ্ট নয়। তেহরানের তরফ থেকে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনের মাধ্যমে ইরানের সপ্তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ মোখবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ইসরায়েল-গাজা সংঘাতের এ সময়ে তেহরানের সঙ্গে তেল আবিবের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। প্রেসিডেন্ট রাইসিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হতো। বলা হয়, তার শাসনামলেই ইরান পর্যাপ্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হয়েছে, যার মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও ছিল। এদিকে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ এরই মধ্যে ইরানের উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজ শহরে স্থানান্তর করা হয়। দেশটির সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির দাফন গতকাল মঙ্গলবার তাবরিজে অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি নিহত সফরসঙ্গীদের দাফনও হয় সেখানে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নরসহ হেলিকপ্টারে থাকা সব আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি। দেশটির শোকার্ত জনগণের প্রতি প্রকাশ করছি সংহতি ও একাত্মতা। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close