নিজস্ব প্রতিবেদক
বাজুস ফেয়ারে সালমান এফ রহমান
জুয়েলারি খাতকে ফরমাল ইকোনমিতে আনতে হবে
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, ‘জুয়েলারি খাতের অনেক কিছু ইনফরমাল ইকোনমিতে বা ব্ল্যাক মার্কেটে আছে। এগুলোর আগে সঠিক তথ্য বের করে এ খাতকে হোয়াইট বা ফরমাল ইকোনমিতে আনতে হবে। তারপর সুন্দর পলিসি সাপোর্ট পেলে এ খাতের বেশির ভাগ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’
গত শুক্রবার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে ‘জুয়েলারি শিল্প বিকাশে অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জুয়েলারি খাতে তথ্যের ঘাটতি রয়েছে জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘এ খাতের বর্তমান অবস্থা এবং স্বর্ণের ব্যবসার সম্ভাবনা নিয়ে সরকারের আরো তথ্য প্রয়োজন। এটি করা সম্ভব হলে জুয়েলারি শিল্পের অনেক সমস্যা সমাধান হবে। এ খাতে দুই ধরনের পলিসি প্রয়োজন। কারণ, স্থানীয় বাজার ও আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য পলিসি আলাদা হবে। তাই জুয়েলারি খাতের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন মার্কেটের জন্য সরকারের কাছ থেকে পলিসি চান তারা। তা না হলে এ দুই মার্কেটের জন্য এক প্রকার দ্বন্দ্ব তৈরি হবে।’
রপ্তানির বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘স্বর্ণের বাজার সম্ভাবনা অনেক হলেও এখনো রপ্তানির দিকে যাওয়ার মতো সময় হয়নি। আগে স্থানীয় বাজার ভালো করে গোছাতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার গোছানোর পর রপ্তানির দিকে গেলে এ সেক্টর টেকসই হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এনবিআর এ খাতে প্রধান সহায়তা করতে পারে। পাশাপাশি শিল্প মন্ত্রণালয়ও এ খাতকে এগিয়ে নিতে পারবে।’
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বক্তব্য শুনে আমরা আশাবাদী এ খাতের উন্নয়ন হবে। এ খাতের উন্নয়নের জন্য যত রকম পলিসিগত রিফরমেশন দরকার যেমন ট্যাক্স, ভ্যাটসংক্রান্ত যা কিছু দরকার সব করে দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল। তিনি বলেন, ‘স্বর্ণ ও জুয়েলারি শিল্পে রিকগনাইজেশন ছাড়া ঋণ পাওয়া খুবই কষ্টকর। সে ক্ষেত্রে এ শিল্পকে আগে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যত বেশি আমদানি হবে তত বেশি রপ্তানি হবে। এর মাধ্যমে এ খাতকে আরো বেশি শক্তিশালী করা যাবে।’ এদিকে বাজুস ফেয়ারের ‘অর্থনীতিতে জুয়েলারি শিল্পের অবদান ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক অন্য একটি সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘জুয়েলারি শিল্পকে দেশীয় শিল্পের বাইরেও একটি রপ্তানিমূলক আধুনিক শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে এর বিনিময়ে যে ডলার বাংলাদেশে আসবে তা আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিকে আরো জোরদার করবে।’ প্রধান অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমএ মান্নান বলেন, ‘ঐতিহাসিক কারণেই এ অঞ্চলে স্বর্ণ, রুপা, হীরার বাজারে প্রবৃদ্ধি হবে। সরকার নিজের ও দেশের প্রয়োজনে এ খাতের জন্য নির্দিষ্ট অঞ্চলসহ অন্য সহায়তা দিয়ে যাবে।’ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে মুজেরীসহ অন্যরা।
"