নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ অক্টোবর, ২০২২

কৃত্রিম তন্তুভিত্তিক পোশাক উৎপাদন

বিনিয়োগ বাড়াতে প্রণোদনার আহ্বান

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ের জন্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে ম্যান মেড ফাইবার বা কৃত্রিম তন্তুভিত্তিক তৈরি পোশাকে আরো বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। আর বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার জন্য নীতিগত প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। ম্যান মেড ফাইবার ফর মুভিং আপ দ্য ভ্যালু চেইন অব আরএমজি ইন দ্য কনটেক্সট অব এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন শীর্ষক এক কর্মশালায় এ আহ্বান জানান তারা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্প (এসএসজিপি) ও বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হক ও বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব শরিফা খান।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প সাম্প্রতিক দশকগুলোয় বিশ্ববাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তবে উল্লেখ্য, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে প্রিফারেন্সিয়াল রুলস অব অরিজিন ও শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত বাণিজ্যসহ নানা সুবিধা হারাবে। বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে তৈরি পোশাক শিল্পের বিশাল অবদানের প্রেক্ষাপটে পরিবর্তিত এ পরিস্থিতির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়তে পারে তৈরি পোশাক শিল্পেই।

তারা আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী তৈরি পোশাকের বাজারে তুলা বা প্রাকৃতিক তন্তুর বদলে কৃত্রিম তন্তুর পোশাকের চাহিদা অব্যাহত বাড়ছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত তৈরি পোশাকের সিংহভাগই প্রাকৃতিক তন্তুভিত্তিক। এমন পরিস্থিতিতে কৃত্রিম তন্তুভিত্তিক পোশাক উৎপাদন বাড়ালে তা বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধিতে ও বাজার সম্প্রসারণে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে রুলস অব অরিজিনের কঠোরতর মানদণ্ড পূরণে কৃত্রিম তন্তুভিত্তিক পোশাক পণ্য অধিকতর সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে কৃত্রিম তন্তুভিত্তিক পোশাক পণ্যের প্রসারের উদ্দেশ্যে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে প্রয়োজনীয় মতবিনিময় ও পর্যালোচনার লক্ষ্যে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ম্যান মেড ফাইবার ব্যবহার করা হলে তৈরি পোশাক খাতে বহুমুখীকরণ আরো ত্বরান্বিত হবে। একই সঙ্গে ম্যান মেড ফাইবারভিত্তিক তন্তু ও কাপড়ের শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হলে আমাদের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ আরো শক্তিশালী হবে।

ইআরডি সচিব শরিফা খান বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকপণ্যের অবস্থান আরো শক্তিশালী করার জন্য প্রাকৃতিক তন্তুর তৈরি পোশাকের প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি ম্যান মেড ফাইবারভিত্তিক পোশাকের বাজারের সম্ভাবনাকে অধিকতরভাবে কাজে লাগাতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হক তার বক্তৃতায় টেক্সটাইল খাতে প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের ওপর জোর দেন।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান তার বক্তৃতায় উত্তরণ-পরবর্তী সময়ের জন্য প্রস্তুতির লক্ষ্যে তৈরি পোশাক খাতের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি সংশ্লিষ্ট আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও লজিস্টিক খাতে আরো উন্নতির ওপর জোরারোপ করেন। কর্মশালার মূল বিষয়বস্তুর ওপর উপস্থাপনা প্রদান করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close