![reporter](/templates/web-ps/images/rp_icon.png)
তিন কবির ৬ কবিতা
![](/assets/news_photos/2023/12/01/image-428740.jpg)
মাহফুজ রিপন
হৃদয়পুর
ইদানীং মন খারপ হলে রেলগাড়িতে উঠে বসি
হাবড়া, হৃদয়পুর হয়ে সোজা শিয়ালদা স্টেশন।
হাজার মুখের দিকে তাকালে কষ্টরা মরে যায়
তার সাথে বসেছিলাম একসিটে বনগাঁ লোকালে
বুকের ঢিপ ঢিপ শব্দ মিশে গেল কুণ্ডঝিক ঝিকে।
মোবাইল টিপেই সময় ফুরালো হলুদ মেয়েটার-
আমি বুঝলাম না তার ভাষা হৃদয়পুর জমে গেল।
রাজেশ্বর
দিনের আলোতে তোমার আরাধনা করি
রাত নেমে এলে শরীরে হলুদ শক্তি ধরে।
মহারাজা জোনাক আলোতে দেখে যাও
প্রেমের শিশির বিন্দু কতটা জমাট ধরে।
আমি বারবার নিরাপদ দূরত্ব ভুলে যাই-
শীতল নিঃশ্বাস প্রেমের গায়ে লাগে রোজ
তোমার ছায়াকায়ায় দাঁড়িয়ে আছি রাজা
ক্ষমা করো আমায় পৃথিবীর রাজ-রাজেশ্বর।
দিবালোকে ব্যবধান বড় হতে থাকে মানবের
মাটিতে রক্ত লেগে আছে, প্রেমবাঁশি বাজাও
সুরেশ্বর ব্যবধান কমাবে, চলো পার হয়ে যাই।
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
আজরাইলের ডানা
কোন্ শালা(!) ব্যাকরণ লিখেছেন অকারণ-
কিচ্ছু বুঝি না, ভেনাসের মতো সারারাত জেগে
জেগে জীবনের খুঁজি কূল, শীত-সমুদ্রের ওপারে
চেয়ে দেখি আজরাইলের ডানা, হাতে সুগন্ধি
বিষের ফুল!
নিপাট অন্ধকারে ঘাম দিয়ে ঘুম কেঁদে ফিরে
তবু ক্রুশবিদ্ধ যিশু বারবার ফিরে আসে নীড়ে
আমিও বিবর্ণ শোক পাথরে বেঁধে রেখেছি সুখ
ভোর হয় হউক, অথবা না হয় না হউক
আজরাইল পিছু হাঁটে, খুঁজে জ্যোতির্ময় মুখ!
পত্ররেখা
এক দিন বাড়ির পাশে ঢেকুর তুলেছিলাম কারক
তখন আশপাশে মৌমাছির অভাব হতো না
এখন কারণও কারণ, অকারণও একটা কারণ
সামনে দিয়ে হেঁটে গেলেও শব্দেরা নদী হয় না!
বাউকুড়ানি ভেবে আমিও এখন একলা আঁধার
সময়ের চোখে সময় দেখি; পত্ররেখা দিয়ে যেটুকু
আলো আসে সেটুকু নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি
হয়তো হিমালয়ের মতো এত পারি না শব্দের উঠোন
তবু নাটক, সিনেমা মঞ্চস্থ হয় কতশত
আমি যেন দেখেও কোনো কিছুই দেখি না!
তারেক হাসান
কবিতার জন্ম দেব বলে
একটা কবিতার জন্ম দেব বলে
নির্বাসন চেয়েছি বহুবার,
যেন প্রকৃতির গহিনে খুঁজে পাই
প্রাকৃতিক নির্জাসে শব্দভাণ্ডার।
একটা কবিতার জন্ম দেব বলে
কৈশোর চেয়েছি কতবার,
কানামাছি খেলেছি সাথীদের সাথে
চেষ্টা করেছি লোকাবার।
একটা কবিতার জন্ম দেব বলে
লোকাল প্রেমে পড়েছি বহুবার
পত্র লিখেছি কত ছন্দ কথায়
উত্তর মেলেনি কখনো তার।
একটা কবিতার জন্ম দেব বলে
কাগজ-কলমের সঙ্গম হয়েছে কতবার
বীর্যপাত হয়েছে কাগজের জরায়ুতে
কিন্তু কবিতার জন্ম হয়নি আর।
অবেলার বৃষ্টি
বুক পকেটে হাত দিতে গিয়ে দেখি
সিলিকনের মতো তুলতুলে মাটির টিলা,
সেখানেই ছিল দুটো আলপিন
যার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হলো
আমার কালো দুটো ঠোঁট।
আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না বলে
শুধু বিদ্যুৎ চমকাতে ছিল ঘর্ষণে
বর্ষণ হয়নি সেদিন মাটির বুকে
রোদ্রে তাপে ঘামতে থাকি শুধু।
"