ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

  ০৯ জুন, ২০২৪

বি.বাড়িয়ায় হত্যা মামলার আসামি ফরাবী জয় গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুর রহমান ইজাজ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃৃত সহসভাপতি মো. হাসান আল ফারাবী জয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার ভোর ৪টায় নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর শুক্রবার রাত সোয়া ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের একটি ঝোপ থেকে জয়ের দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করে পুলিশ।

গতকাল শনিবার দুপুরে জেলার পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং হত্যা রহস্য উদঘাটনের বিষয়ে অবহিত করেন। এসময় পুলিশ সুপার জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। জালাল হোসেন খোকা ও জয় এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তারে বাধা হয়ে উঠেছিল ইজাজ ও আরো কয়েকজন। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতো। একারণেই খোকা এবং জয় ক্ষিপ্ত হয়েই হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে। হত্যাকান্ডের অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান পুলিশ সুপার। এ সময় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বিল্লাল হোসেন, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ১৬ জনকে আসামি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুর রহমান ইজাজের পিতা হাজী মো. আমিনুর রহমান। ওই মামলায় ২ নম্বর আসামি করা হয় মো. হাসান আল ফারাবী জয়কে। ১ নম্বর আসামি করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জালাল হোসেন খোকাকে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, খোকার হুকুমেই ইজাজকে গুলি করে জয়। ঘটনার পরপরই গুলি করে চলে যাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। গত ৫ জুন শহরের কলেজ পাড়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে : এজাহারে বলা হয়, ৫ জুন সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার হিসাবে ইজাজ খ্রিস্টান মিশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটের লাইনে দাঁড়াতে যায়। খোকা লাইন ভেঙে জোর জবরদস্তি করে ভোট দিতে গিয়ে ইজাজকে ধাক্কা দিয়ে লাইন থেকে বের করে দেয়। ইজাজ প্রতিবাদ করলে খোকার নেতৃত্বে অপরাপর আসামিরা তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এরপর ঘটনার কিছুক্ষণ আগে ইজাজ বাসা থেকে বের হয়ে সরকারি কলেজের উদ্দেশে রওনা দিলে পূর্বে থেকে উৎপেতে থাকা আসামিরা ইজাজকে হত্যার উদ্দেশে জড়ো হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্র খোকাসহ সব আসামিরা পিস্তল, রাম দাসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ইজাজসহ তার বন্ধুদের পথরোধ করে।

সে সময় জালাল তার কাছে থাকা পিস্তলটি হাসান আল ফারাবী জয়ের হাতে তুলে দিয়ে বলে, ‘হারামজাদা আমার সঙ্গে বেয়াদবি করে। তুই তারে গুলি করে মেরে ফেল।’ এক নম্বর আসামি খোকার হুকুম পাওয়া মাত্রই দ্বিতীয় আসামি জয় ইজাজকে মাথার বামপাশে গুলি করে। গুলির আঘাতে ইজাজ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গুলি বামপাশ দিয়ে ডুকে মাথার মগজ বেরিয়ে আসে। ইজাজের সঙ্গে থাকার ঘটনার আকস্মিকতায় স্তব্দ হয়ে যায়। এজাহারে আরো বলা হয়, বাসা থেকে কলেজে যাওয়া আসা অবস্থায় জালাল হোসেন খোকার সঙ্গে ইজাজের বিরোধ সৃষ্টি হয়। খোকা একজন চিহ্নিত খুনি। সে ও তার অনুগত বাহিনীর মাধ্যমে সব কলেজপাড়ায় এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। খোকা এবং জয় ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছে কলেজপাড়ার সাগর ও শাফি আলম, শাহাদাত হোসেন সানী, কলেজপাড়ার মামুন ও মাসুম, শাহরিয়ার প্রকাশ লাদেন ও রুবেল, অলি, রুমান ও তারেক, সৌরভ, মামুন ও মোরসালিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close