নাটোর প্রতিনিধি

  ০৯ জুন, ২০২৪

লিবিয়ায় অপহৃত নাটোরের ৪ যুবক

মুক্তিপণের দাবিতে লিবিয়ায় অপহরণ করা হয়েছে নাটোরের চার অভিবাসী শ্রমিককে। সেই যুবকদের বেঁধে রেখে চালানো হচ্ছে নির্যাতন। সেই নির্যাতনের ভিডিও চিত্র দেখিয়ে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে অপহরণকারীরা। এমন দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই চার যুবকের পরিবারের সদস্যরা। বুক ফাটা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাদের মায়েরা। ‘সন্তানের জান ভিক্ষা চেয়ে’ জিম্মি চার যুবকের মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা সন্তানদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ওই চার যুবক হলেন- নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের শাহজাহানের ছেলে সোহান হোসেন, তায়জাল শেখের ছেলে সাগর শেখ, মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী ও ইনামুল ইসলামের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন। তারা সবাই শ্রমজীবী মানুষ, প্রায় নিঃস্ব। বছর দু-এক আগে তারা সবাই জমি ও ভিটেমাটি বন্ধক রেখে, গরু বিক্রি করে ও ধারদেনা করে টাকা জমিয়ে লিবিয়ায় পাড়ি জমান। সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে শ্রমিকের কাজ করতে পাড়ি দেন তারা। গত ২ জুন লিবিয়া থেকে ওই চার প্রবাসীর পরিবারের ইমো নাম্বারে মোবাইল ফোনে কল আসে। রিসিভ করতেই বলা হয় তাদের চারজনকে অপহরণ করা হয়েছে, মুক্তিপণ চাওয়া হয় ৪০ লাখ টাকা।

এমন খবরে পরিবারের সদস্যরা স্তব্ধ হয়ে যায়। ইমো নাম্বারে পাঠানো হয় জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও। একে তো নিঃস্ব এবং ধারদেনা করে ঋণগ্রস্ত তার ওপরে সন্তান হারানোর আতঙ্কে তারা দিশাহারা। পরিবারের সদস্যরা অসহায় দিন কাটাচ্ছেন।

জিম্মি সোহানের মা ধুলি বেগম বলেন, সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সংসারের সবকিছু শেষ করে এবং বিভিন্ন মানুষের থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাঠাই সন্তানকে। সেই সন্তানকে আজ জিম্মি করে নির্যাতন করা হচ্ছে। মা হয়ে কী করে সহ্য করব আমি।

জিম্মি বিদ্যুতের মা সাকেরা বেগম জানান, তিনি তার ছেলেকে ফিরে চান। তার টাকা-পয়সা, ঘরবাড়ি কিছুই নেই। তার সন্তানের বাবা নেই, কোনো আত্মীয় নেই। একমাত্র সন্তানকে তিনি ফিরে পেতে চান।

জিম্মি সাগর হোসেনের মা নিজের ছেলেসহ জিম্মি চারটি সন্তানকে নিরাপদে ফিরে পেতে সরকারের কাছে অনুরোধ করেন। সরকারের কাছে অন্য কোনো চাওয়া নেই তার।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো ঘটনা তাকে কেউ এখন পর্যন্ত জানায়নি। তবে তিনি জানা মাত্রই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। এরপর জিম্মি পরিবারের সদস্যদের কাছে গিয়ে আইনি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close