ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ছেলের চুরির অপবাদে মাকে পিটিয়ে হত্যা
![](/templates/web-ps/images/news-logo.jpg?v=4)
ঠাকুরগাঁওয়ে সন্তানের চুরির অপবাদ তুলে এক আদিবাসী নারী শ্রমিককে রাতভর নির্যাতন করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সকালে শহরের পরিষদপাড়ায় লিচু বাগানের গাছ থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত দায়ন ঋষি (৪০) পরিষদপাড়ার বিশু ঋষির স্ত্রী।
নিহতের স্বজনরা জানান, সোমবার রাতে শহরের পরিষদপাড়ার আমজাদ হোসেন লিটনের বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা চুরি হয়- এমন অপবাদ দিয়ে পরদিন সকালে একই পাড়ার দায়ন ঋষির ছেলে রাজন ঋষিকে ধরে নিয়ে আসেন আমজাদের লোকজন। এরপর পার্শ্ববর্তী বড়বাড়ী এলাকায় নিয়ে শিশু রাজনকে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে টাকা চুরির অপবাদে নির্যাতন করেন। বেধম নির্যাতন সইতে না পেরে রাজনের কাছ থেকে চুরি করার স্বীকারোক্তি নেয়। পরে রাজনের মা দায়ন ঋষিকে তুলে নিয়ে আসেন আমজাদের লোকজন। এরপর রাতে আর বাড়ি ফেরেনি আদিবাসী শ্রমিক দায়ন ঋষি। বুধবার সকালে স্থানীয়রা একটি লিচু বাগানে দায়নের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
রাজন ঋষি বলেন, টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে প্রতিবেশী আমজাদ হোসেনের লোকজন তাকে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। টাকা চুরির স্বীকারোক্তি নিতে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পরে তার মাকে তুলে এনে নির্যাতন চালিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার পর দুপুরে পরিষদপাড়ার আদিবাসীরা সদর থানা ঘেরাও করে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। কিন্তু অভিযুক্ত আমজাদ হোসেন লিটন তার বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পরিজন নিয়ে সটকে পড়েন। এজন্য তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আদিবাসী নেত্রী জেসপিনা জানান, নিহত দায়েন ঋষির শরীরের বেশ কয়েকটি স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। তিনি এটিকে পরিকল্পত হত্যাকাণ্ড দাবি করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেছেন। স্থানীয় পৌরসভার কাউন্সিলর দোলন জানান, বাড়িতে চুরি হয়েছে এটা শুনে আমজাদ হোসেনকে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। ঠাকুরগাঁও জেলা আদিবাসী পরিষদের সভাপতি জাকোব খালকো বলেন, আদিবাসীরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। দায়েন ঋষিকে হত্যার পর গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
"