বেড়া-সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
বেড়া পাউবো
৩৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর একসঙ্গে বদলির আবেদন
পাবনার বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) কর্মরত ৩৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে বদলি চেয়ে আবেদন করেছেন। আবেদনের পর সমালোচনা শুরু হলে বদলি আবেদন প্রত্যাহার করতে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ৯ কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার ঢাকায় যান। গতকাল বুধবারও তারা ঢাকায় অবস্থান করেন। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম।
গত ৯ মে স্বেচ্ছায় বদলি চেয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন ৩৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
অভিযোগ ও বেড়া পাউবো সূত্রে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়া, বিভিন্ন ধরনের কাজ বুঝিয়ে দেওয়া, সম্পন্ন করা ও লেনদেন নিয়ে আগে বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে বর্তমান কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর জেরে গত ৯ মে স্বেচ্ছায় বদলি চেয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন ৩৭ কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি, মানসিক, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মাধ্যমে নামে বেনামে মিথ্যা, হয়রানি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পত্র প্রেরণ করছেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানা ধরনের বিব্রতকর জবাবদিহি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’ এমন পরিস্থিতিতে কাজের পরিবেশ নেই দাবি করে স্বেচ্ছায় বদলির আবেদন করেন তারা। আবেদনের পরপরই সমালোচনা শুরু হয়।
সরেজমিন গতকাল সকালে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে দেখা গেছে, অধিকাংশ কর্মকর্তাদের রুম তালাবদ্ধ। তবে তিনজন উপসহকারী প্রকৌশলী অফিস করছেন। বেশিরভাগ কর্মচারী অফিসে নেই। সাংবাদিকদের দেখেই তাদের ছোটাছুটি শুরু হয়।
এ বিষয়ে উচ্চমান সহকারী রাকিবুল ইসলাম, তাউফিকুর রহমান ও অফিস সহায়ক মজিবুর রহমানসহ একাধিক কর্মচারী বলেন, ‘স্যাররা আবেদনে স্বাক্ষর করতে বলায় আমরা স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আবেদনে কি লেখা আছে বলতে পারি না। শুধু বলছে বদলির আবেদন করবে, স্বাক্ষর করবে, করে দিছি।’
তিন উপসহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমান, আবদুল খালেক ও হাবিবুর রহমান বলেন, ‘স্যারদের অফিসিয়াল কাজ থাকায় তারা ঢাকায় অবস্থান করছেন। আবেদনের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। স্যারের (নির্বাহী প্রকৌশলী) নির্দেশনা ছাড়া এ বিষয়ে কথা বলা নিষেধ।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পওর বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরীকে তার কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকারকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। খুদেবার্তা পাঠিয়েও তার সাড়া মেলেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান বলেন, ‘পাবনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে জানিয়েছেন ঢাকায় একটি মিটিংয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ৯ জন একসঙ্গে ঢাকা যাওয়ার বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি।’
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আমিরুল হক ভূঞা বলেন, ‘আমি তো দেশের বাইরে ছিলাম। আজ (গতকাল) সকালেই আসছি। বিষয়গুলো জানা নেই।’
"