নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ এপ্রিল, ২০২৪

দাসত্ব থেকে বাঁচতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

- মির্জা ফখরুল

‘কিছুই এখন অবশিষ্ট নেই। ঐক্যের কথা আমরা বলি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা আমরা বলি, সেই চেতনার লেশমাত্র এখন আর অবশিষ্ট নেই।’ দেশে ‘কঠিন দুঃসময় চলছে’ উল্লেখ এ অবস্থার পরিবর্তনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার বিকেলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নাগরিক স্মরণ সভায় দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ একটা দুঃসময়, কঠিন সময়ৃ আমরা অতিক্রম করছি। রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক সংকট ভয়াবহভাবে আমাদের আক্রমণ করেছে। এখানে বিচারব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ হয়ে গেছে, এখানে অর্থনীতিকে পুরোপুরিভাবে নিজেদের মতো করে তারা লুটপাট চালাচ্ছে। আজকে রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে একেবারে উপড়ে ফেলা হয়েছে।’

‘কিছুই এখন অবশিষ্ট নেই। ঐক্যের কথা আমরা বলি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা আমরা বলি, সেই চেতনার লেশমাত্র এখন আর অবশিষ্ট নেই। যার জন্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরীরা লড়াই করছিলেন, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যদি আবার আমাদের ফিরিয়ে আনতে হয়, বাংলাদেশকে যদি সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমরা পরিণত করতে চাই, তাহলে নতুনভাবে আবার বলীয়ান হয়ে জাফরুল্লাহ ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে’, বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন আমরা এ প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করি কে কী বলল সেটা ভাবার দরকার নেই। আমাদের মধ্যে যে আশা, যে আকাঙ্ক্ষা আছে, আমরা যারা একাত্তর সালে যুদ্ধ করেছি, আমরা যারা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছি, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছি, যারা গুম হয়েছে তাদের সবাইকে সেই সম্মানটুকু দেওয়ার জন্যে আমাদের আজ একটামাত্র দায়িত্ব আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।’

‘আজকে এ ভয়াবহ দুঃশাসন, যারা আমাদের সব ভালো অর্জনগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, আমাদের প্রতি মুহূর্তে পঙ্গু করে ফেলেছে, আমাদের পুরোপুরি একটা দাসে পরিণত করছে, এ দাসত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে। এ ছাড়া, আর কোনো বিকল্প নেই’, যোগ করেন তিনি। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারাজীবন দেশের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন উল্লেখ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ নাগরিক স্মরণ সভার আয়োজন করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ সভা উদযাপন কমিটি। গত বছরের ১১ এপ্রিল ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জুলহাস নাইম বাবুর সঞ্চালনায় নাগরিক সমাজের মধ্যে ব্র্যাকের হোসেন জিল্লুর রহমান, সুজনের বদিউল আলম মজুমদার, ব্রতীর শারমিন মুরশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, এফবিসিসিআইয়ের আবদুল হক, মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, বেলার সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ‘মায়ের ডাক’ এর সানজিদা ইসলাম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, মিয়া মশিউজ্জামান এবং প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মেয়ে বৃষ্টি চৌধুরী স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন। এসময় প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘আজীবন মুক্তিযোদ্ধা’ এবং ‘অকুতোভয় দেশপ্রেমিক’ অভিহিত করে দেশের মানুষের জন্য তার বর্ণাঢ্য কর্মকাণ্ডের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বিভিন্ন পেশার নাগরিকরা। নাগরিক স্মরণ সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সহধর্মিণী শিরিন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীসহ তার আত্মীয়স্বজন এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close