আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

  ২১ এপ্রিল, ২০২৪

স্থগিত জেনেও গণিপুর দাখিল মাদরাসায় নিয়োগ পরীক্ষা

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণার পরও নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের গণিপুর দাখিল মাদরাসায়। এ মাদরাসায় নিরাপত্তাকর্মী পদের নিয়োগ পরীক্ষার বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে গত শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এবং গতকাল শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আতাবুল হোসেন নামের একজন প্রার্থী। এরপরই ওই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের জন্য মুঠোফোনে নির্দেশ দেন আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম। এক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার জানিয়েছেন নিয়োগ বোর্ডের একজন সদস্যও অনুপস্থিত থাকলে নিয়োগ অবৈধ হিসাবে গণ্য হবে।

গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১০টায় ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে চলছে নানা প্রস্তুতি। কিছু সময় পরই শুরু হয় নিরাপত্তাকর্মী পদের নিয়োগ পরীক্ষা। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন প্রার্থী। ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদরাসাটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সুপার। তবে দেখা মিলেনি নিয়োগ বোর্ডের অন্যতম সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফোন আসে ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারের কাছে।

একই ফোন থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে। ফোনে কথা শেষ হওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুপারকে বলেন, ইউএনও ডেকেছে।

তখন সুপার সভাপতিকে বলেন ঢাকা থেকে লোক এসেছে, এখন পরীক্ষা স্থগিত করা যাবে? এর পরও চলমান থাকে নিয়োগ পরীক্ষা। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগের দিনের আগের রাতে ওই পদের আবেদনকারী প্রার্থীদের বাড়িতে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নোটিস পাঠানো হয়। পারিবারিক কাজে প্রার্থী আতাবুল হোসেন এলাকার বাহিরে অবস্থান করায় নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। ওই নিয়োগ পরীক্ষায় ডি এম মুনিম নামের একজনকে নিয়োগ প্রদান করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগকারী প্রার্থী মো. আতাবুল হোসেন বলেন, তারা নিয়ম অমান্য করে বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থ লেনদেন করে ডি এম মুনিম নামের প্রার্থীকের নিয়োগ দেবে বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। সেই লক্ষ্যে তারা কৌশলে পরীক্ষার আগের রাতে আমার বাড়িতে নোটিস পাঠায়।

এত অল্প সময়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এটি একটি লোকদেখানো নিয়োগ পরীক্ষা ছিল।

ওই মাদরাসার সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, এ অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই।

মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষা নিচ্ছি। এই নিয়োগে আমরা কোনো প্রার্থীর কাছে থেকে আর্থিক লেনদেন করিনি। যদি কেউ অভিযোগ দেয় সেটা মিথ্যা। ইউএনওর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে, নিয়োগ পরীক্ষা শেষে তার সঙ্গে দেখা করব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাবেদ ইকবাল হাসান বলেন, শনিবার বেলা ১১টায় নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের কথা ছিল। ওই দিন সকালে নিয়োগে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ হলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করতে জানানো হয়েছে। তবে আমি ওই মাদরাসায় যাইনি। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তথা নিয়োগ বোর্ডের একজন সদস্যও অনুপস্থিত থাকলে নিয়োগ অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম এ বিষয়ে বলেন, ওই মাদরাসার নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করতে বলা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close