reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ নভেম্বর, ২০২৩

মো. সিরাজুল ইসলামের হাসির গল্প

ক্রিকেট বিড়ম্বনা

ক্রিকেট খেলার প্রতি আমার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। এটা আমার একপ্রকার নেশায় রূপান্তরিত হয়ে গেছে। কিন্তু শহরে থেকে মাঠ আর সময়ের অভাবে খেলা হয় না। তবে এবার ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে দারুণ এক বিড়ম্বনার মুখোমুখি হলাম।

বাড়ির পাশে পাড়ার কচিকাঁচা ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে। আমি অনেকক্ষণ ধরে তাদের খেলা দেখছি আর নিজে নিজে মজা উপভোগ করছি। কচিকাঁচাদের চেঁচামেচি, দৌড়াদৌড়ি আর এলোমেলো খেলা দেখে আমার বেশ ভালোই লাগছে। শেষ পর্যন্ত নিজেকে সামলে রাখতে পারলাম না। ছোট মানুষের মতো তাদের কাছে বায়না ধরলাম আমাকে খেলতে নেওয়ার জন্য। কিন্তু কিছুতেই তারা আমাকে খেলতে নেবে না। অনেক ফুসলিয়ে-ফাসলিয়ে রাজি করলাম। তবে শর্ত দিল আমাকে ধর্মের খোলে খেলতে হবে। ধর্মের খোল বলতে আমি শুধু দু-দলের ব্যাটিং করব, তাও সবার শেষে। বোলিং, ফিল্ডিং করতে পারব না। আমি শর্ত মেনে নিলাম।

এদের মধ্যে কাউকে আমি চিনি, কাউকে চিনি না। ওরা আমাকে কাকু, মামা, ভাইয়া ইত্যাদি বলে ডাকছে। আমিও ওদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্বোধন করে ডাকছি।

সবার শেষে এবার আমার ব্যাট করার পালা। ব্যাটিংয়ে নামতেই কড়া হুকুম; লুঙ্গি কাছা দিতে হবে! (কাছা মানে লুঙ্গি ছোট করে গুছিয়ে পরা) আমি বাধ্য হয়ে লুঙ্গি কাছা দিয়েই ব্যাটিং করতে শুরু করলাম। একটা বল-ব্যাটের কানায় লেগে পাশের বাড়ি গিয়ে পড়ল, আর সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁজালো চিৎকার! কেরে, কেরে বল মারল...? বলতে বলতে একজন মহিলা ছোট লাঠি নিয়ে তেড়ে আসছে। সব খেলোয়াড় আমাকে দেখিয়ে বলছে আমরা মারিনি, উনি মারছে! আমার তো পরানের মধ্যে ধুক-পুক শুরু হয়ে গেছে! দৌড় দেব এমন সাহসও পাচ্ছি না। লজ্জায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলাম। মহিলাটা কাছে এসে জিজ্ঞেস করল কিরে কেমন আছিস? আমি মাথা উঁচু করে তাকিয়ে দেখি মহিলাটি আমার স্কুলজীবনের বান্ধবী সোমা। অনেক দিন পর সোমাকে দেখলাম তাই দূর থেকে চিনতে পারিনি। আমি কোনো মতে স্বাভাবিক হয়ে বললাম ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?

আমিও ভালো, তা তুই এদের সঙ্গে কী করিস? সোমার প্রশ্ন।

আমি বললাম, কী আর করব ক্রিকেট খেলি।

হুম। সারাজীবন খেলে যেতে হবে! পেছনে তাকিয়ে দেখো আমার ছোট ছেলে উইকেট কিপার।

সোমার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম- এটা তোর ছোট ছেলে? আর বড় টা...?

সোমা বলল, বড়টা ক্লাস ফাইভে পড়ে আর ছোটটা থ্রিতে।

আমি ফিসফিস করে বললাম, ভাগ্যিস তোর মেয়ে হয়নি রে...!

আরে চিন্তা করিস না, আশায় থাক এবার হবে! এ কথা বলেই সোমা চলে গেল।

আর আমি লুঙ্গির কাছা খুলতে খুলতে সোমার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close