ধুন্দলের মাথায় চুল নেই বলে বিয়ে করতে পারছে না। এ যাবৎ যতগুলো মেয়ে দেখেছে, সব মেয়ের কাছেই রিজেক্টেড। দেখার প্রাক্কালেই বিয়ে ভেঙে দেয় পাত্রী। ধুন্দল মাথাটাকে হাতিয়ে দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে হাঁসফাঁস করে ওঠে। এই দুনিয়াতে একটি মেয়ে নেই তার টাক মাথাকে ভালোবাসবে।

টাক মাথার এহেন দুর্যোগ অবস্থার অসহায় সুযোগ লুফে নিল ঘটক পিয়ার আলী। পাত্র আর পাত্রীর দুর্বলতা দুই পক্ষের কাছেই গোপন করায় পিয়ার আলী ওস্তাদ। ধুন্দলের ক্ষেত্রে শুধু পাত্রের বিষয় গোপন করল পাত্রীপক্ষের কাছে।

বরসাজে সজ্জিত ধুন্দল খোশ মেজাজে বিয়ে করতে চলল। পাত্রীর বাড়িতে জাঁকজমক করে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। ভোজন আর বিয়ের আনুষ্ঠানিক উচ্চমাত্রার আনন্দের জন্য হাইড্রোলিক মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেই মঞ্চে হাজির হলো পাত্র এবং পাত্রী। অধিকন্তু গরম আর পরচুলা পরার কারণে ধুন্দলের মাথা ঘুরছে, আর তার পা-ও কাঁপছে। হঠাৎ জ্ঞান হারাল ধুন্দল। এমন কাণ্ডে হুলুস্থূল পড়ে গেল বিয়েবাড়িতে। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে ধুন্দলের নববিবাহিতা স্ত্রীও।

ধুন্দলকে ধরাধরি করে শোয়ানো হয়। তাকে সুস্থ করার জন্য চোখেমুখে পানিও দেওয়া হয়। ধুন্দলকে সুস্থ করতে যখন সবাই ব্যস্ত, তার স্ত্রীও সেখানে আসে। ধুন্দলের মাথায় হাত বোলাতে থাকে। কিন্তু পরের ঘটনার জন্য একেবারেই প্রস্তুত না কেউ। ধুন্দলের স্ত্রী যখন তাকে সুস্থ করতে মাথায় হাত বোলাচ্ছে হঠাৎই ধুন্দলের পরচুলা খুলে তার হাতে ওঠে আসে। মুহূর্তেই পরিস্থিতি গরম।

স্বামীর মাথায় টাক, এটা মেনে নিতে পারল না স্ত্রী। চিৎকার করে বলতে থাকে, এ বিয়ে সে ভেঙে দিতে চায়। অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে পাত্রপক্ষ। পাত্রীপক্ষের তরফে প্রতারণার অভিযোগ তুলল। তাদের অভিযোগ, সম্বন্ধ করার সময় বিষয়টি লুকিয়ে গেছে পাত্রের পরিবার। বিয়েবাড়িতে বিষয়টি নিয়ে খুব হুলুস্থূল কাণ্ড। অতিথিরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দু’পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করল। কিন্তু পাত্রীকে তার সিদ্ধান্ত থেকে টলানো গেল না। শেষমেশ পুলিশের সহযোগিতায় বিয়ে মাঝপথে ছেড়েই চলে যেতে হয় ধুন্দলকে।

ধুন্দলের বুক চিড়ে প্রাচীন দীর্ঘশ্বাস বেরোয়। তার বিয়ে ভাগ্যটা মোটেই সুখকর নয়। কিন্তু পরক্ষণেই ধুন্দল নিজের টাক মাথার ওপর সন্তুষ্ট হয়। পরচুলা নেই, গড়ের মাঠ মাথায় গরম নেই। তাই জ্ঞান হারানোর ভয়ও নেই। তার টাক ভাগ্য

ভালো। ধুন্দল টাক মাথাতেই বেজায় খুশি।

"