কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ০৮ জুন, ২০২৪

কোটালীপাড়া

ঠিকাদারের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বিকল্প সড়ক ছাড়াই সেতুর কাজ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়াই সড়ক ও নৌপথ বন্ধ করে চলছে নতুন সেতুর কাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ‘ভুল বোঝাবুঝিতে’ এমনটি হয়েছে বলে জানা যায়।

এতে ২০ দিন ধরে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারী যাত্রী, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী, কৃষক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৩ কোটি ৫০ লাখ ২০ হাজার ৩৮৩ টাকা ব্যয়ে মাঝবাড়ি-রাধাগঞ্জ সড়কের কুশলা খালের ওপর ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ পায় বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

গতকাল বুধবার সকালে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০ দিন আগে শুরু হয়েছে প্রকল্পের কাজ। যা শেষ হওয়ার কথা আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমান সেতুটি ব্যবহারে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এক মাস আগে এখানে নতুন সেতুর কাজ শুরু হয়। কাজের শুরুতেই সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়ক কেটে ফেলায় সবধরণের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

কুশলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পল্লী চিকিৎসক হাফিজুর রহমান জানান, সংযোগ সড়ক কেটে ফেলায় পণ্য পরিবহনসহ সবধরণের যোগাযোগে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। গ্রামের সরু রাস্তা দিয়ে ২ থেকে ৩ কিলোমিটার ঘুরে ভ্যানযোগে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করলেও ব্যবসায়িক পণ্যসহ ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে রাধাগঞ্জ বাজার হয়ে দোকানের মালামাল আনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

এমন পরিস্থিতির কারণে ১৫ দিন ধরে গ্যাসের সিলিন্ডার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া জানান, তার দোকানে গ্যাসের খালি সিলিন্ডার পরে আছে। কোম্পানির গাড়ি আসছে না সেতুর সমস্যার কারণে। ক্রেতারা গ্যাসের সিলিন্ডার নিতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান জানান, এ পথে এতো মানুষের চলাচল সত্ত্বেও কেন বিকল্প সড়ক রাখা হলো না, তা তার বোধগম্য নয় বলে জানান তিনি।

ব্রিজ সংলগ্ন কুশলা নেছারিয়া সিনিয়র ফাজিল (বিএ) মাদরাসার অধ্যক্ষ বাকের হোসেন বলেন, এখানকার শিক্ষার্থীরা খুব বিপদে পড়েছেন বিকল্প সড়ক না থাকায়।

মাদরাসার দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাফিজুর বলেন, ‘প্রতিদিন ৩০ টাকা বেশি দিয়ে অন্য পথে ঘুরে মাদরাসায় আসতে হচ্ছে।’

টুটাপাড়া গ্রামের গৃহিনী হেলেনা বেগম বলেন, ‘বিকল্প সড়ক না থাকায় কুশলা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।’

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। প্রকল্পটিতে বিকল্প সড়ক নির্মাণের কোনো ব্যয় রাখা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা হয়েছে দ্রুত বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হবে।’

কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ কালু জানান, বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।

এলজিইডির কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম বলেন, ‘ওয়ার্ক অর্ডারে বিকল্প সড়কের ব্যয় ধরা হয়েছে। বিষয়টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বুঝতে পারে নাই। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, দ্রুত বিকল্প সড়ক নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close