শহীদুল ইসলাম বাবর, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম)

  ০৭ জুন, ২০২৪

দুই মাসে পানিতে ডুবে ১৬ শিশুর মৃত্যু

চট্টগ্রামে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। প্রতি বছরই এই ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘতর হলেও এ হার কমিয়ে আনতে কারো কোনো উদ্যেগ নেই। নেই কোনো পদক্ষেপ। এ নিয়ে জনমনে বাড়ছে ক্ষোভ আর হতাশা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিভাবকরা সচেতন না হলে এই হার কমিয়ে আনা সম্ভব নয়।

জানা যায়, গত দুই মাসে চট্টগ্রামে শুধু পানিতে ডুবেই ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার বাশখালীতে পুকুরে মাছ ধরতে নেমে পানিতে ডুবে মারা যায় তামজিদ হোসেন (১১) নামের এক শিক্ষার্থী। তামজিদ শেখেরখীল উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেডুর ছাত্র। গত ৩১ মে সাতকানিয়ার ছদাহা ইউনিয়নের তোহা মিয়া (১৪) বছরের এক শিশু পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। গত ২৬ মে সকালে আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের সিকদারের বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে ইমন (৯) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। গত ২৪ মে হাটহাজারী উপজেলায় পৃথক স্থানে পুকুরের পানিতে ডুবে নওশাদ (১১) ও তাজবীদ (২) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। একই দিন রাঙ্গুনিয়ায় পুকুরে ডুবে মারা যায় আয়ান (৪) নামের এক শিশু। গত ২২ মে বাঁশখালীতে পৃথক ঘটনায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছনুয়া মধুখালী ইসহাক মুন্সির বাড়ি ও পৌরসভার উত্তর জলদী ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেয়াজর পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া শিশুরা হলো, উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছনুয়া মধুখালী ইসহাক মুন্সির বাড়ির আল মামুন ফয়সালের মেয়ে রোমাইসা জান্নাত (২) ও বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদী ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেয়াজর পাড়া এলাকার আবু হামিদের ছেলে মেহাম্মদ আবির (২)। ১৮ মে রাঙ্গুনিয়ায় পুকুরে ডুবে মুহাম্মদ শাওন (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। মুহাম্মদ শাওন ইসলামপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সাহেবনগর এলাকার শাহছুফি আব্দুল কাদের (রহ.) দাখিল মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। ২৮ এপ্রিল আনোয়ারায় পুকুরের পানিতে ডুবে মোহাম্মদ রায়হান (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়।

২২ এপ্রিল চন্দনাইশে পুকুরে ডুবে নুসরাত জাহান ফারিয়া মিম্পা (৭) ও জান্নাতুল মাওয়া (৯) নামে দুই শিশু মৃত্যু হয়েছে। ১৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড এলাকায় পানিতে ডুবে সামিদুল নামের ৯ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ৫ এপ্রিল বাঁশখালীর শীলকূপ ও সরল ইউনিয়নে পুকুরের পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো, শীলকূপ ইউনিয়নের মাইজপাড়ার আবু ছালেকের মেয়ে ওয়াজিফা

বেগম (৬), রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে মারিয়া আক্তার (৫) এবং সরল ইউনিয়নের মিনজিরিতালা গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে তাহরিন বেগম (৬)।

পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার লক্ষে কাজ করা চট্টগ্রামের আইনজীবী বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব এএম জিয়া হাবিব আহসান বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার বেশি হলেও পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা কম নয়। পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে প্রথমত, প্রাতিষ্ঠানিক নজরদারি প্রয়োজন। সকাল নয়টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ডুবে মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে শিশু বয়স থেকেই সাঁতার শেখানো হলেও বাংলাদেশে এই পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় কিংবা সামাজিকভাবে নেওয়া হয় না। যার ফলে বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বেশি। দ্বিতীয়ত, ৬ থেকে ১০ বছরের শিশুদের অবশ্যই সাঁতার শেখাতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close