আশরাফুল ইসলাম, শ্রীপুর (গাজীপুর)
শ্রীপুরে আলী পেপার মিল
কারখানার ধোঁয়ায় বিপন্ন পরিবেশ অভিযোগেও মিলছে না প্রতিকার
![](/assets/news_photos/2024/05/14/image-456672.jpg)
গাজীপুরের শ্রীপুরে আলী পেপার মিল নামে একটি কাগজ তৈরির কারখানার ছাই ও কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ এখন হুমকির মুখে পড়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আশপাশে গাছপালা, কমে গেছে পশুপাখির আনাগোনা। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের তালতলী বাজার থেকে দরগারচালা পর্যন্ত ৪-৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়েই রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দোখলা খাল। এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ও খালের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে আলী পেপার মিল নামের কারখানাটি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দোখলা খাল এলাকায় আলী পেপার মিলের কাগজ উৎপাদনে ব্যবহৃত বয়লারের কারণে সৃষ্টি হয় কালো ধোঁয়া। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কারখানা থেকে অনবরত বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া ও ছাই। এতে কারখানার আশপাশের গাছে মড়ক ধরেছে। কমে গেছে ফসল উৎপাদন। সেইসঙ্গে কমেছে বন্যপ্রাণী ও পাখির উপস্থিতি। এতে কৃষিকাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। কারখানার ছাই মিশে যাচ্ছে ঘাস, খড় ও ধানখেতসহ গো খাদ্যে।
সাইটালিয়া গ্রামের গৃহবধূ হামিদা, নুরুন্নাহার ও শিমু জানান, আলী পেপার নামে এই কারখানাটি এলাকাকে ধ্বংস করছে। কারখানার কালো ধোঁয়া ও ছাই ঘরে ঢুকে বিছানার চাদর ও ঘরের জিনিসপত্র নষ্ট হয়। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করতে পারি না।
একই এলাকার কৃষক আবদুল খালেক জানান, কারখানার ধোঁয়ার সঙ্গে নির্গত ছাই আশপাশের খেত ও ফসলের ওপর গিয়ে পড়ে। ফলে কোনো ধরনের সবজি চাষ করা যায় না। যখন ধোঁয়া ছাড়া হয় তখন ঠিকমতো নিঃশ্বাসও নেওয়া যায় না।
এছাড়া ধোঁয়ার সঙ্গে ছাই বের হয়ে পুরো এলাকার ঘরবাড়ি বিবর্ণ হয়ে গেছে। ঘাসের ওপর কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত কেমিক্যাল ছড়িয়ে পড়ায় গবাদি পশুর জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ছাই পড়া ঘাস খেয়ে মোস্তাফিজুর রহমান নামে একজনের একটি গাভি মারা গেছে। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন আশপাশে বসবাসকারী মানুষ।
এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপপরিচালক নয়ন মিয়া।
এদিকে, কারখানার স্টোরকিপার তসলিম মিয়া জানান, এখানে কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষ নাই। বক্তব্য নিতে হলে হেড অফিসে যেতে হবে। তিনি বক্তব্য দিতে পারবেন না বলেও জানান। এরপর তিনি কারখানার ব্যবস্থাপকের মোবাইল নম্বর দেন।
কারখানার ব্যবস্থাপক সুমন মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
"