শোভন আহমেদ, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া)
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা
অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কাজ করেন না তহসিলদার, অভিযোগেও নেই সুরাহা
![](/templates/web-ps/images/news-logo.jpg?v=4)
কুষ্টিয়া ভেড়ামারা উপজেলার মোকাররমপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের তহসিলদার শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ (অতিরিক্ত টাকা) নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ভুক্তভোগীরা। ইচ্ছামতো সময় নিয়ে ও অতিরিক্ত টাকা ছাড়া তিনি কোনো কাজই করেন না বলে অভিযোগ করেছেন সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগপত্র দিয়েও তার বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ভূমি মালিকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভূমি কর্মকর্তা বলেন, ‘দৌলতপুর উপজেলার বাসিন্দা তিনি। দৌলতপুর ছাড়াও ভেড়ামারার বিলশুকা ও কুষ্টিয়ার মজমপুরে তার বাড়ি রয়েছে। তিনি ম্যানেজ করে চলেন। তাই অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।’
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, সেবা নিতে আসা অধিকাংশ ব্যক্তি এর আগেও একাধিকবার এসেছেন। তহসিলদার শরিফুল ইসলাম সেদিনও তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন। সাংবাদিক দেখে কয়েকজনের কাজ করে দিলেও উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি ছবি তুলে রাখেন। সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমিও লিখতে পারি, লেখাতেও পারি।’
স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, ‘শরিফুলের টার্গেট অসহায় ও দরিদ্র কৃষক। তার কাছে কেউ কাজের জন্যে গেলে নানা অজুহাতে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে বাড়িতে লোক দিয়ে কাজ করাবে বলে অতিরিক্ত টাকা নেয়। যা নেয় তার অর্ধেকেরও কম রশিদ করে। ৩০০ টাকার কমে একটি পর্চাও মেলে না। সে এখানে ৬ বছর ধরে আছে। কিছু বললেই বলে ওপরে লোক আছে, কিচ্ছু হবে না।’
খেমিরদিয়ার থেকে আসা মালেকা খাতুন বলেন, ‘গত তিনদিন থেকে ঘুরছি। এখনো কাজ হয়নি।’ ভুক্তভোগী সামিরুন বেগম বলেন, ‘২০২৩ সালের ডিসেম্বরে খারিজের জন্য টাকা দিয়েছি। এখনো কাজ হয়নি।’
বাহাদুরপুরের কৃষক জমির মণ্ডল বলেন, ‘আমি তহসিলদারকে (শরিফুল) জমি খারিজের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছি। আর সে দাখিলা কেটেছে ৭ হাজার ৩০০ টাকার। বাদ বাকি পকেটে ভরেছে।’
ফার্নিচার ব্যবসায়ী আসাদুল বলেন, ‘আমার ভূমি অফিসের পাশে বাড়ি হওয়ায় জমি খাজনা বাবদ ৩০০ টাকা নেওয়ার শর্তে ৫ হাজার টাকার কাজ সে ১৬০০ টাকায় করে দিয়েছে।’
বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি থাকার কথা স্বীকার করলেও শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শতভাগ কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি করি না। একটি ছেলে দিয়ে বাড়িতে কাজ করাই। তাকেও নিজে বেতন দেই বলেও জানান তিনি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
"