দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি

  ০৩ এপ্রিল, ২০২৪

খুলনার দাকোপ

সড়কের পাশে করাতকল অর্ধেকের নেই লাইসেন্স

* উপজেলায় ১২টি করাতকলের মধ্যে ৬টির নেই লাইসেন্স * সড়ক ঘেঁষে করাতকলগুলোর কাঠ ও গাছের গুঁড়ি রাখায় সংকুচিত হয়ে পড়ছে চলাচলের রাস্তা * বনবিভাগের কাছে অবৈধ করাতকলের তালিকা চেয়েছেন ইউএনও

খুলনার দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়ক ঘেঁষে অবৈধভাবে ১২টি করাতকল গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে ৬টি করাতকলের লাইসেন্স নেই। ইতোমধ্যে বন বিভাগের কাছে অবৈধ করাতকলের তালিকা চেয়েছেন বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এদিকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ যানবাহনের চালক, যাত্রীসহ স্থানীয়দের।

জানা গেছে, ২০১২ সালের করাতকল (লাইসেন্স) বিধিমালা অনুযায়ী, করাতকল স্থাপনে বন বিভাগে আবেদন করতে হবে। জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন জায়গায় করাতকল স্থাপন করা যাবে না।

সড়কের (পাশে) ঘেঁষে লাইসেন্সবিহীন করাতকলগুলো হচ্ছে, চালনা আচাভুয়ার শহিদুল ইসলাম (খোকন) করাতকল, সাইদ গাজী করাতকল, মোস্তফা সানা করাতকল, সুরাঞ্জন করাতকল, শংকর করাতকল, ও বাজুয়া খেয়া ঘাট সাইফুল ইসলাম করাতকল। এরমধ্যে সুরাঞ্জন ও শংকর এ দুই জনের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা হয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে লাইসেন্সবিহীন করাতকলের কয়েকজন মালিক জানান, তারা লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এখনো লাইসেন্স পাননি।

দাকোপ বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ১২টি করাতকল গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে ৬টি করাতকলের লাইসেন্স নেই। বনবিভাগের নীতিমালায় (সংরক্ষিত আইন) সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারপরেও নীতিমালা ভেঙে স্থানীয় প্রভাবশালীরা লাইসেন্সবিহীন গড়ে ওঠা এসব করাতকলে অবৈধভাবে নানা রকমের কাঠ চেরাই করে যাচ্ছে।

আঁছাভূয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খলিল শেখ, রহিম গাজি ও বাহাদুর ব্যাপারি জানান, দিনরাত করাতকলে কাজ চলায় কাঠের গুঁড়া বাতাসে উড়ে চলন্ত যানবাহনের চালক ও পথচারীদের চোখে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। সেই সঙ্গে সড়ক ঘেঁষে করাতকলগুলোর কাঠ ও গাছের গুঁড়ি রাখায় সড়কগুলোও সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

চালনা পৌরসভার আচাভুয়া বাজার এলাকার স’মিল মালিক শহিদুল ইসলাম (খোকন), নুরমহাম্মদ, মোস্ত সানা, সাইদ গাজী বলেন, মিল যখন চালু করা হয়, তখন রাস্তার পাশে পথচারীদের সাবধানতায় নেটজাল ঝুলিয়ে রাখা হয়। যাতে কাঠের গুঁড়া পথচারীদের ক্ষতি করতে না পারে।

পশ্চিম বাজুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উজ্জ্বল রায় বলেন, রাস্তা দিয়ে চলার সময় বাতাসে কাঠের গুঁড়া উড়ে চোখে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দাকোপ উপজেলা বন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন সহায়তা করলে অবৈধভাবে করাতকলগুলো ভ্রাম্যমাণ আদালতে শুধু জরিমানা না করে উচ্ছেদ করা হবে।

দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, বনবিভাগের কাছে অবৈধ করাতকলের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়া গেলে নীতিমালা না মেনে পরিবেশের ক্ষতি করলে এসব করাতকলের লাইসেন্স বাতিলসহ উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close