চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৫ মার্চ, ২০২৪

মাটি কাটায় বেড়েছে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য, নেই ব্যবস্থা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের আওতাধীন পদ্মা নদীর ৬ নম্বর বাঁধ এলাকা থেকে এক্সাভেটর দিয়ে দেদারছে কাটা হচ্ছে মাটি। প্রায় এক দশক ধরে চলছে মাটি কাটার এই উৎসব। সম্প্রতি তা বেড়েছে বহু গুণে। আইন অমান্য করে নদীপাড়ের মাটি কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়। স্থানীয় প্রশাসনের চোখ এড়াতে রাতের অন্ধকারেও মাটি কাটছে একাধিক চক্র। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাটিভর্তি শতাধিক ট্রাক্টর। মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচলে প্রভাব পড়ছে সড়কগুলোতেও।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাটি ব্যবসায়ীদের লুট থেকে বাদ যাচ্ছে না খাসজমি, খাল, নদীর তীর ও তিন ফসলি জমি। এসব মাটির শেষ ঠিকানা হচ্ছে ইটভাটা। রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নাম ভাঙিয়ে একাধিক সিন্ডিকেট খনন যন্ত্র দিয়ে কাটছে নদীপাড়। নামধারী কিছু গণমাধ্যমকর্মীও এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।

স্থনীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় নদী এই এলাকার আরও কাছাকাছি বইতো। পরে বাঁধ নির্মাণ করায় নদী গতিপথ পরিবর্তন করে। নদীর বুকে চর জেগে ওঠে। বিস্তীর্ণ এলাকার চরের জমিতে চাষিরা ধান, গম, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করেন। কিন্তু মাটি মাফিয়ারা চাষের জমি কেটে ফেলায় গভীর গর্ত হয়ে যাচ্ছে জমি। নগদ লাভের আশায় না বুঝে মাটি মাফিয়াদের ফসলি জমি দিচ্ছেন কৃষকরা। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০টি লোড ট্রাক্টর স্পারের বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচল করছে। ট্রাক্টরে মাটি বহনের কারণে ব্যবস্থা ।

সূত্র জানায়, মূলত টনির নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে মাটিমাফিয়াদের সিন্ডিকেট। একই এলাকার বাবু, ইসমাইল সুধা, বিদ্রিশ মেম্বার একাধিক স্পট থেকে মাটি কাটছেন। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি অবৈধভাবে মাটি কাটার অপরাধে শফিক নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাঈমা খান। এরপর কয়েকদিন বন্ধ ছিল। এখন আবার মাটি কাটা শুরু হয়েছে।

এলাকাবাসী বলছেন, আমাদের ক্ষতির কথা প্রশাসনের অজানা নয়। কিন্তু মাটির কারবার বন্ধ করার ব্যবস্থা করছে না। যত্রতত্র ইটভাটা চলতে থাকলে মাটির কারবার বন্ধ হবে না। এগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেখার কথা। তবে তারা দেখছে না। সুন্দরপুর এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, পদ্মা নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। ধ্বংস করা হচ্ছে কৃষিজমি।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত টনি বলেন, এখন মাটি কাটা বন্ধ আছে। তিনি আগে মাটি কাটতেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করার পর বন্ধ করেছেন। বাঁধের কাজ চলছে সেখানে ভরাট দিচ্ছি এটা সরকারি কাজ। যেখান থেকে মাটি কেটে ভরাট দিচ্ছেন সেটি সেটি বৈধ কি না? এ প্রশ্ন এড়িয়ে যান টনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাছমিনা খাতুন বলেন, কীভাবে, কোথায় কোথায় মাটি কাটা হচ্ছে, তার খোঁজ নিচ্ছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close