মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
বেতন না দেওয়ায় ২৫ শিক্ষার্থী ক্লাসের বাইরে
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিশেষ ক্লাসের বেতন না দেওয়ায় ২৫ শিক্ষার্থীকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পৌর শহরের কমলপুর হাজী জহির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তিন শিক্ষককে অভিযুক্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। পরে গত বুধবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে অবস্থান নেয় ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- ওই উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী এনায়েত উল্লাহ, লোকমান হোসেন ও আজিজুল হক।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগে জানা যায়, মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষার জন্য তাদের কোনো ক্লাস হচ্ছে না। তবে বিশেষ ক্লাসের নামে একটি ক্লাস চালু রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ ক্লাস বাধ্যতামূলক করতে হয়। ক্লাসের বেতন ধরা হয়েছে ৫০০ টাকা। মাসিক পরীক্ষার ফি ১০০ টাকা। ৬০০ টাকা তাদের দিতে হচ্ছে। কিছু শিক্ষার্থী অস্বচ্ছল পরিবারের, তাদের সামর্থ্য নেই। টাকার জন্য তারা পরীক্ষায় দিতে পারেনি। এ ছাড়া ক্লাসে না গেলে ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা ও বেতন দিতে না পারলে শিক্ষকরা অসদাচরণ করেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থী তারেক মিয়া, প্রত্যয়, শহিদুল হক তমাল, সৌরভী আক্তার জানান, বিশেষ ক্লাসের নামে বেতন দেওয়া লাগে ও ক্লাসে না যেতে পারলে জরিমানাও দিতে হয়। না দিতে পারলে থাকতে হচ্ছে ক্লাসের বাইরে।
কমলপুর হাজী জহির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লেফটেন্যান্ট অহিদুর রহমান এ বিষয়ে জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শুধু দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, যদি কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন এবং তার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক এনায়েত উল্লাহ অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে কোনোরকম খারাপ ব্যবহার করিনি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলছে।’ বাকি দুজন শিক্ষকও অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার স্বপ্না বেগম বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। ইউএনও স্যার বিষয়টি অবগত হয়েছেন। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি কি করা যায়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম গোলাম মোর্শেদ এ বিষয়ে জানান, শিক্ষার্থীদের একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
"