শাহিদা আক্তার সাথী, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)

  ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

প্রণোদনায়ও কমেছে সরিষার চাষ, তবু উচ্চফলনের আশা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রণোদনা দেওয়ার পরও কমেছে সরিষার আবাদ। এবার উপজেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫৪০ হেক্টর কম। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উচ্চফলন আশা করছেন চাষিরা।

চলতি বছর রায়পুরে সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ টন। উপজেলায় সরিষার মণ বাজারজাত মূল্য প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা। সরিষা আবাদের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬ হাজার বায়ান্ন হেক্টর কিন্তু আবাদ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭০০ হেক্টর, রায়পুরে ২৫০, কমলনগর ২৩০, রামগঞ্জে ৮০ ও রামগতি উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। জেলায় এবার সরিষা উৎপদানের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ছয় হাজার ৯৬০ টন।

এদিকে চলতি বছরে রায়পুরের ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কিছু অংশে ৮২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন চাষিরা। চলতি আবাদ গত বছরের তুলনায় ৫৪০ হেক্টর জমি কম। ২০২৩ সালে উপজেলায় সরিষার আবাদ হয় ৭৯০ হেক্টর জমিতে।

রায়পুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফসলের মাঠগুলো সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। মাঠে কাজে ব্যস্ত কৃষক। সড়ক-মহাসড়কে চলাচলের সময় পাশের মাঠে সরিষার খেত দৃষ্টিকাড়ে সবার। অনেকেই খেতের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেন।

রায়পুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়ার জন্য ভালো জাতের সরিষা বীজ বারি-১৪, বারি-১৭, বিনা-৯, বিনা-৭ চাষ করেন চাষিরা। প্রতি হেক্টর জমিতে সরিষার গড় ফলন প্রায় ১ দশমিক ২ মেট্রিক টন, যা প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয় ২৮ থেকে ৩০ মন। উঁচুজমি সরিষা চাষের জন্য উপযুক্ত বলে জানান চাষিরা।

উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি ৫০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আমাকে কৃষি অফিস থেকে সাদা সার ১৫ কেজি, কালো সার ১০ কেজি, লাল সার ১০ কেজি, বীজ বারি-১৪, বিনা-৭ দিয়ে সহযোগিতা করেন।’

পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও আমাদের জমিটা পরিত্যক্ত ছিল। কিন্তু কৃষিবিভাগের পরামর্শে ওই জমিসহ এবার ৩৩ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। কৃষি বিভাগ থেকে আমাকে লাল সার ৩০ কেজি, কালো সার ৩০ কেজি, সাদা সার ২৫ কেজি, বীজ বারি ১৪ দিয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছে।’

রায়পুর কৃষি কর্মকর্তা তাহমিনা খাতুন বলেন, ‘গত বছরের ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলার কারণে এ অঞ্চলে সরিষা চাষে অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবু এ অঞ্চলের মাটি অনেক উর্বর হওয়ায় জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে রায়পুরে ২৫০ হেক্টর জমিতে ভালো ফলনে আশা করছি। কৃষি বিভাগ থেকে এ বছর উপজেলার ১ হাজার ৭০০ কৃষককে বিনামূলে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে । তাদের মধ্যে ১ হাজার ৭০০ বিঘা জমি বিনামূল্যে প্রণোদনার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ৫১টি প্রকল্প প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষকদের অনুপ্রাণিত করা হয়েছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close