পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বদলির পরও পেকুয়ায় কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের অভিযোগ

কক্সবাজারের পেকুয়ায় শাস্তিমূলক বদলির পরও নিয়মিত অফিস করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী। জানা যায়, এর আগে তাকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মস্থল ত্যাগের আদেশ দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে তাকে তার নতুন কর্মস্থল কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত পরিপত্র চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর থেকে পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদকে পেকুয়ায় নিজ পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেন্থেসিওলজি) পদে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। বলা হয়, ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আগের কর্মস্থল অবমুক্ত করতে হবে। ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বলা হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পদ অবমুক্ত না করা গেলে স্ট্যান্ডরিলিজ হিসেবে গণ্য হবে।

এদিকে পরিপত্র জারির ২০ দিন পার হলেও এখনো স্বপদে বহাল আছেন ওই কর্মকর্তা। শাস্তিমূলক বদলি আদেশের পরও তিনি পেকুয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস করছেন নিয়মিত। এতে তাকে নিয়ে বিতর্ক হয়েছে একাধিকবার।

সূত্র জানায়, পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঘিরে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেবা ও পরিষেবা খাতে সরকার আমূল পরিবর্তন করে। ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকসহ অনেকে জানান, একজন কর্মকর্তার মুঠোবন্দি এখানকার সেবা কার্যক্রম। আছে বড় কর্তাদের সিন্ডিকেট। যত অনিয়ম ও দুর্নীতি হোক বলা যাবে না।

কয়েকজন কর্মচারী দাবি করেন, ডা. মহিউদ্দিন মাজেদ প্রভাবশালী কয়েকজনকে নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। যেসব পরিষেবা চালু করা হয় সেসব কয়েক মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। প্রাইভেটে রোগী দেখাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ হাসপাতালে দুটি অ্যাম্বুলেন্স, তিনটি জেনারেটর বিকল অবস্থায় রয়েছে। রোগী পরিবহনের জন্য বাইরে থেকে ছয়টি অ্যাম্বুলেন্সকে রাখা হয়। এসবের কমিশন যায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার পকেটে। জ্বালানি সংকট দেখিয়ে ৩টি জেনারেটরের মধ্যে ২টি নিষ্ক্রিয় থাকে।

কর্মচারীরা আরো জানান, এ হাসপাতালে এক্সরে, অটোক্লাভ, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফির মেশিনসহ ২০ থেকে ২৫ ধরনের মেশিন ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে সরকার। চালু করা হয় আইসিও, ওটি, ডেন্টালসেবাসহ সব ধরনের সেবা। আছে ২৯ জন চিকিৎসক। এসবের পরও ব্যবস্থাপনা অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, মহিউদ্দিন মাজেদকে এখান থেকে বদলি করা হয়েছে। শুনেছি ওনার কিছু কাজ আছে। মন্ত্রণালয়ে সময়ের জন্য তিনি দরখাস্ত দিয়েছেন।

ডা. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, আমার বদলি আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার নুবেল বড়ুয়া বলেন, আমি সিভিল সার্জন হিসেবে মাত্র যোগদান করেছি। বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখবো।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, এটি সিভিল সার্জনের এখতিয়ার। বিষয়টি দেখব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close