আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর
চিনিকলের বর্জ্যে মরছে তুলসীগঙ্গা নদীর মাছ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে জয়পুরহাট চিনিকলের নিষ্কাশিত বর্জ্যে চিড়ি নদীর মধ্য দিয়ে তুলসীগঙ্গা নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। দূষিত ওই নদীর মাছ মারা যাচ্ছে। এমনই অভিযোগ গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের ও চিড়ি নদীর পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি সভাপতির। বিপাকে পড়েছে মৎস্যজীবীরা। তবে চিনিকলের বর্জ্য আসার অভিযোগ অস্বীকার করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ।
আওয়ালগাড়ী গ্রামের শাজাহান আলী ও আবুল কালাম খাঁসহ স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, সুগারমিলের পানি আমাদের চিড়ি ও তুলসীগঙ্গা নদীর পানি দূষিত করছে। এতে নদীর মাছ মরে যাচ্ছে। কৃষি কাজও করা যাচ্ছে না। প্রত্যেক বছরই এই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
উলিপুর গ্রামের আবদুল মন্ডল বলেন, চিনিকলের বিষাক্ত পানি নদীতে আসায় সব মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এতে করে মাছ শূন্য হয়েছে তুলসীগঙ্গা নদী। এখন থেকে তিন চার মাস নদীতে মাছ পাওয়া যাবে না।
সরেজমিন দেখা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার আওয়ালগাড়ি গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া চিড়ি নদীর কালো বর্ণের দুর্গন্ধযুক্ত পানি পড়ছে আক্কেলপুরের তুলশীগঙ্গা নদীতে। এতে উপজেলার জামালগঞ্জ পাঁচ মাথা থেকে সোনামুখী তুলশীগঙ্গা নদী পর্যন্ত চিড়ি নদী এবং মাদারতলী সেতু এলাকা থেকে আক্কেলপুর পৌর এলাকার কলেজ বাজার পর্যন্ত তুলসীগঙ্গা নদীর পানি কালো বর্ণ ধারণ করেছে। মরে ভেসে ওঠছে নদীর মাছ, সেই মাছ ধরছে জেলেরা।
চিড়ি নদীর পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবদুল মোত্তালেব বলেন, চিনিকলের বর্জ্যরে দূষিত পানিতে চিরি ও তুলসীগঙ্গা নদীর পানি কালচে ও দুর্গন্ধ হয়েছে। এই পানি দিয়ে কৃষক জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। দূষিত পানি নিষ্কাষণ বন্ধে অনেকবার আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছি।
আক্কেলপুর মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাশফেকুর রহমান বলেন, বিষাক্ত বর্জ্যমিশ্রিত পানি নদীতে প্রবেশের কারণে নদীর মাছ মরে ভেসে উঠছে। এতে কোনো জলজ প্রাণীই বাঁচতে পারবে না। আগামী তিন থেকে চার মাস নদী মৎস্য শূন্য হয়ে যাবে। এই সময়গুলোতে জেলেরা অত্যন্ত
কষ্টের মধ্যে দিন কাটায়। বিষয়টি নিয়ে জেলা সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হবে।
আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, নদীর দূষিত কালো পানি দিয়ে কৃষি জমিতে সেচ কাজ না করার জন্য কৃষকদের নিরুৎসাহী করছি। এতে ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপক আখলাছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘চিনিকলে আমাদের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট রয়েছে। সেখানে নিয়মিত দূষিত পানি শোধন করা হচ্ছে। নদীর পানি কোনো দূষণ হচ্ছে আমার জানা নেই।’
জয়পুরহাট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন বলেন, নদীর পানি বিভিন্ন কারণে দূষণ হতে পারে। সুগার মিলের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পরিদর্শন করে দূষণের দায় পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"