কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ

অনুমতি না নিয়ে বিদেশ গেলেন ৪ প্রাথমিক শিক্ষক

কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন সহকারী শিক্ষক অনুমতি না নিয়ে বিদেশ চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে শিক্ষকের অভাবে পাঠদান বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তারা উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রফা করে এ অনৈতিক সুবিধা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগন। তাদের মধ্যে মুর্শেদা খাতুন কোথায় গেছেন জানা যায় নি। বাকি ৩ জন যুক্তরাজ্য অবস্থান করছেন।

বিদেশ যাওয়া ৪ জন সহকারী শিক্ষক হলেন, উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসরাত জাহান, মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাবিবুর রহমান, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মোরশেদুল ইসলাম ও সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন।

জানা গেছে, শিক্ষক ইসরাত জাহান চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়ে ৩ অক্টোবর থেকে আর স্কুলে আসেননি। পরে জানা গেছে তিনি যুক্তরাজ্য চলে গেছেন। শিক্ষক হাবিবুর রহমান গত ২২ জানুয়ারী স্কুলে যোগাদান করে মাত্র একদিন ক্লাস করান এরপর ২৩ জানুয়ারি থেকে আর স্কুলে আসেননি। শিক্ষক মো. মোরশেদুল ইসলাম সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ থেকে বিদ্যালয়ে আর উপস্থিত হননি। পরে জানা গেছে এই তিনজন যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন।

এদিকে শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন ১২ অক্টোবরের ৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়েছেন ২ মাস এরপর আর বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি। তিনি কোনো দেশে গেছেন জানা যায়নি।

মাইজগাঁও প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস খান, মির্জাপুর প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক হারুন মিয়া, বৃন্দাবনপুর প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক রেজিয়া বেগম ও চৈতন্যগঞ্জ প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, কেউ ছুটি কাটিয়ে আর আসেননি আবার কেউ কিছু না বলেই বিদ্যালয় থেকে চলে গেছেন। পরবর্তীতে লোকমুখে শুনেছি তারা বিদেশে চলে গেছেন। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাদের পরিবর্তে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষক সংকট থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে তারা জানান।

অভিযুক্ত শিক্ষকদের পরিবার জানায়, ‘হাবিবুর রহমান, ইসরাত জাহান, মোরশেদুল ইসলাম স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। আর মুর্শেদা খাতুন কোথায় গেছেন জানা যায় নি।’

উপজেলার কয়েকজন সহকারী শিক্ষক জানান, ‘চিকিৎসার কথা বলে অনেকেই ২ মাস ছুটি কাটান। আসলে এই দুইমাস তারা বিভিন্নভাবে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য প্রসেসিং করেন। হঠাৎ এভাবে যাওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি তাদের।’

কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা ছুটি কাটিয়ে স্কুলে আসেননি বা না জানিয়ে কোথাও চলে গেছেন তাদেরকে আমরা নোটিশ পাঠিয়েছি। বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, যারা এভাবে না বলে চলে গেছে তারা কাজটি ঠিক করেনি। চাকরি থেকে সেচ্ছায় অভ্যাহতি নিয়ে চলে যেতো পারতো। যারা দুই মাসের অধিক ছুটি কাটিয়ে বিদ্যালয়ে আসেনি আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close