ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

  ৩০ নভেম্বর, ২০২৩

পাবনার ভাঙ্গুড়া

রুহুল বিলে বাউত উৎসব মিলছে না কাঙ্ক্ষিত মাছ

কারো হাতে পলো, কারো হাতে খেয়া জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। দল বেঁধে বিলে নেমে মাছ শিকার করছেন। কেউ পাচ্ছেন বোয়াল, কেউবা শোল, রুই, কাতল। অনেকে ফিরছেন খালি হাতে। এভাবেই পাবনার ভাঙ্গুড়ায় রুহুল বিলে মাছ শিকারে মেতেছেন মৎস্য শিকারিরা। এই আয়োজনের নাম ‘বাউত উৎসব’। তবে, এ বছর বিলে কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা না মিলায় হতাশ মৎস্য শিকারিরা।

সরেজমিনে ভোর ৬টার দিকে পাবনা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কের ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাটুলিপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো অন্তত ২০টি বাস। এসব বাসে কুষ্টিয়া, নাটোর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ থেকে এসেছেন অনেক মৎস্য শিকারি। আবার অনেকে ইজিবাইক, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে এসেছেন। এরপর রুহুল বিল অভিমুখে ছুটে চলেন মানুষ। ভোরের আলো ফোটার আগেই বিলপাড়ে হাজির নানা বয়সী হাজারো মানুষ। সবার হাতে পলো, ঠেলা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। একসঙ্গে বিলে নেমে চলছে মাছ শিকার। দল বেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মৎসশিকারীদের ডাকা হয় ‘বাউত’। তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ।

জানা গেছে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরের শুরুতে মাসব্যাপী চলে এই উৎসব। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে বিলাঞ্চলের পূর্বনির্ধারিত এলাকায় দল বেঁধে মাছ শিকারে নামেন বাউতেরা। বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে বিলপাড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।

টাঙ্গাইল থেকে মাছ শিকারে আসা আশিকুর রহমান বলেন, বাউত উৎসবের কথা অনেক শুনেছি। এবার টাঙ্গাইল থেকে প্রায় ২০টি বাস নিয়ে পাঁচ শতাধিক লোক এসেছি মাছ ধরতে। একসঙ্গে মাছ ধরার আনন্দই আলাদা।

নাটোর থেকে আসা আরেক মৎস্য শিকারি সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই আসি এই বাউত উৎসবে। কিন্তু এবার মাছ নেই বললেই চলে।

চাটমোহর উপজেলার মাছ শিকারি ময়েন প্রামানিক বলেন, ‘প্রভাবশালীরা আগেই চায়না দুয়ারী, কারেন্ট জাল দিয়ে সব মাছ মাইরে লিছে। পরে তারা বিলে গ্যাস ট্যাবলেট দিছে, যে কারণে ছোটখাটো মাছ যা আছে বেশির ভাগ মরে গেছে। পানিতেও দুর্গন্ধ মেলা। এজন্যি মাছ নাই ইবার।’

পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্রের ক্ষতি না করে বাউত উৎসব পালন করতে হবে। এ বিষয়ে মৎস্য শিকারিদের সচেতন হতে হবে। সেই সঙ্গে বিলে গ্যাস ট্যাবলেট বা নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছের ও পরিবেশের ক্ষতি করছে এমন অভিযোগ পেলে মৎস্য আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close