জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ৩০ নভেম্বর, ২০২৩

নীলফামারীর সৈয়দপুর

নকল প্রসাধনীতে সয়লাব বাড়ছে রোগের সম্ভাবনা

* মোটা অঙ্কের জরিমানা বা কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় নকল প্রসাধনী ব্যবসায়ীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে * পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নকল প্রসাধনী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর কর্মকর্তা

নকল প্রসাধনীতে সয়লাব নীলফামারীর সৈয়দপুরসহ জেলা সদর ও আশপাশ এলাকা। নকল এসব প্রসাধনী ব্যবহারে নানা ধরনের চর্মরোগসহ স্কিন ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে। অভিযোগ উঠেছে, এসব পণ্য বিক্রি করা ব্যবসায়ীদের থামাতে নেই সংশ্লিষ্ট কারো আইনগত পদক্ষেপ। ভোক্তা অধিদপ্তর-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলছেন, লোকবল কম থাকায় কঠোর তৎপরতা চালানো যাচ্ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উল্লিখিত ব্যবসায়ীদের প্রায় সকলের দোকানেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে নকল প্রসাধনী। এসবের গায়ে লেখা রয়েছে মেড ইন জার্মানির জায়গায় মেড ইন জার্মানসহ বিভিন্ন দেশের স্টিকার। ইউনিলিভারের ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির বদলে ফেজার অ্যান্ড লাভলি ও ফুয়ার অ্যান্ড লাভলি নামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া রং ফর্সা করার ক্রিম, শেভিং ফম, ফেসওয়াস, ন্যাচারাল ব্লাক কালার, হেড অ্যান্ড সোল্ডার, সাবান সহ অর্ধশতাধিক নকল প্রসাধনী বিক্রি করা হচ্ছে। শিশুদের অলিভ অয়েল, আফটার সেভ লোসন, জনসন বেবি লোসন, সহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রি বিক্রি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সৈয়দপুর শহরের চুড়িপট্টি এলাকার সাহিদ, জাবেদ, সনু, আমির, চান, সাদ্দাম ও ফয়সাল সহ বেশ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার চকবাজার সহ একাধিক মার্কেট থেকে নকল প্রসাধনী ক্রয় করে নিয়ে আসছেন সৈয়দপুরে। এরপর তারা তাদের ক্রয়কৃত প্রসাধনী গুদামজাত করে চুড়িপট্টি এলাকার দোকানে সামান্য কিছু রেখে বিক্রি করছেন। তারা জানায় এসব ঢাকার চকবাজার থেকে ক্রয় করে এনেছেন।

চুড়িপট্টি এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, মাঝে মধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তর ২-৩টি দোকানে অভিযান চালিয়ে চলে যান। তারা মোটা অংকের জরিমানা বা কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলেই ওইসব ব্যবসায়ীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।

নকল প্রসাধনীর ব্যবসায়ী চান ও আমির বলেন, ‘আমরা এসব ঢাকার চকবাজার থেকে ক্রয় করে আনছি। ক্রয়কৃত প্রসাধনী গুলো যদি নকলই হয় তা দেখার বিষয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার, কোনো সাংবাদিকের নয়।’

ঢাকা থেকে আসা সৈয়দপুর শহরের প্রাইম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবা দিতে আসা চর্মও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফারহানা সুলতানা বলেন, ‘নকল প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে। চামড়ায় একজিমা সহ স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।’

নীলফামারীর ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা গাউসুল আজম বলেন, দজনবল সংকটের কারণে মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় জরিমানাও করা হয়। পর্যাপ্ত জনবল থাকলে নকল প্রসাধনী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যেতো।’

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান জানান, অনেকের মুখেই শুনেছেন নকল প্রসাধনীর ব্যবসা প্রায় রমরমা ভাবেই চলছে সৈয়দপুর শহরে। অল্প দিনের মধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close