মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)
বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ছড়া
সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বালু ব্যবসা সিন্ডিকেটে প্রভাবশালীরা
বালু মহলের ম্যানেজারের দাবি, টোকেন দেখলে পুলিশ-প্রশাসন ও বন বিভাগ কেউ গাড়ি আটকায় না * কোনো ধরনের বালু মহল ইজারা দেওয়া হয়নি বলে জানান ভূমি কর্মকর্তা
![](/assets/news_photos/2023/11/28/image-428248.jpg)
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পুঁইছড়ি ছড়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা জড়িয়ে পড়ছে সিন্ডিকেটে। পাহাড় কেটে ও ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে পাহাড় ধ্বসে ক্ষতির সম্মুখীন বনভূমি। বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করে পাচার হচ্ছে গাছ-পালা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুঁইছড়ি ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বহরাতলী এলাকায় ৬-৭টি জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে। প্রেমবাজার থেকে পূর্ব দিকে রওনা দিতেই দেখা যায়, পুরো ৩ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই নাজুক।
প্রতি দশ মিনিটের মাথায় একের পর এক বালুভর্তি ট্রাক আসছে আর যাচ্ছে। রাস্তা জুড়ে ধুলো আর ধুলো।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জঙ্গল পুঁইছড়ি বালুমহালের ইজারা ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে বাতিল করে জেলা প্রশাসন। এর আগে ২০১৯ সালে স্থানীয় ঠিকাদার মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন ২২ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় জঙ্গল পুঁইছড়ি বালুমহাল ইজারা নিয়েছিলেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে অনেক গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার অভিযোগে বালুমহালের ইজারা বাতিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। বরং দিনের পর দিন আরো বেশি করে বালু তুলছেন স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে হাজারো ফসলী জমি, ঘর-বাড়ি ও জাতীয় সম্পদ বিলীন হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। তাই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান বাসিন্দারা।
বালু মহলের ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সরকারিভাবে ইজার আছে। ইজারাদারের পক্ষ থেকে প্রতি ট্রাকের ড্রাইভারকে একটি টোকেন দিয়ে থাকি। এই টোকেন দেখলে পুলিশ প্রশাসন, বন বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসন কেউ আমাদের গাড়ি আটকাবে না।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল খালেক পাটোয়ারী জানান, বাঁশখালীতে কোথাও কোনোধরণের বালু মহল ইজারা দেওয়া হয়নি। যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
"