চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

৪০০ বছরের মসজিদ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে প্রায় ৪০০ বছরের কালের সাক্ষী মসজিদের পাড় মসজিদ। ঐতিহ্যেবাহী এই চিলমারীতে এত পুরনো মসজিদ এটিই। কেউ জানে না স্থাপিত কবে হয়েছিল। ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটির অবস্থান চিলমারী উপজেলা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার উত্তরে মজিদের পাড় এলাকায়। তবে ওই এলাকার নামকরণও করা হয়েছে পুরনো মসজিদকে অনুকরণ করে মসজিদের পাড়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদগাহ মাঠের দক্ষিণ পাশে ধূসর বর্ণের পাথরে অসাধারণ নির্মাণশৈলীর মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। পূনঃসংস্কার করলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীসহ সাধারণ দর্শনাথীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

জানা গেছে, প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই মসজিদের সামনে মাঠের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট ও প্রস্ত ৮০ ফুট। মসজিদটি প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে তেমন কোনো জানা তথ্য না পাওয়া গেলেও স্থাপত্য ও নির্মাণশৈলী দেখে অনুমান করা হয় এটি মূঘল আমলে তৈরি করা হয়েছিল। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি স্থাপত্যশিল্পের অসাধারণ নিদর্শন। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ২০ ফুট আয়তনের এই মসজিদে দুই কাতারে ৪০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। মসজিদটির সামনে তিনটি দরজা, উত্তর ও দক্ষিণ মুখো দুইটি জানালা আছে। গাঁথুনির জন্য পাতলা ইট ও টালির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে চুন-সুরকি। মসজিদের ভেতরের দেয়ালে আঁকা আছে নানা ধরনের লতাপাতা ও ফুলের কারুকাজ। সেগুলো নষ্ট হওয়ার পথে। মসজিদের গাঁথুনির সময় চুন-সুরকির সঙ্গে ডালও মেশানো হয়েছিল বলে ধারণা অনেকের। মুসল্লির সংখ্যা বাড়তে থাকায় জায়গা সংকুলন না হওয়ায় ২০১৪ সালের মাঝা-মাঝি সময়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পুরোনো মসজিদটি ঠিক রেখে সামনের দিকে নতুন করে সংস্কার করা হয় ।

দীর্ঘদিন ধরে এখানকার মানুষজন বিভিন্ন রোগ শোকে বা কাজের সফলতার জন্য এ মসজিদে মানত করে থাকে। আর সে কারণে মানত বিশ্বাসী মানুষেরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গিয়ে মানত করে। মসজিদটির কোনো নাম না থাকলেও এই মসজিদটি ঘিরে এলাকার নাম করণ করা হয়েছে মসজিদের পাড়। অন্যদিকে মসজিদটির বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ, ইমাম ও মুয়াজ্জেম এর বেতন সাপ্তাহিক শুক্রবার জুম্মার নামাজের দিন মুসল্লিদের দান ও মানতের টাকায় চলে।

ওই এলাকার আব্দুর রহিম বলেন, এখনো শতশত মানুষ ছুটে আসে মসজিদের উঠানে, মানত করে। আরো বলেন, শুধু মুসলমান নয় বিভিন্ন ধর্মাবলী মানুষজন মানত করতে ছুটে আসে। এদিকে পুরোনো এ মসজিদে ঈদুল ফিতর ও আযহা নামাজে অসংখ্য মুসল্লি জায়গা সংকুলন না হওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, মসজিদটির ঐতিহ্য ধরে রাখাসহ সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close