বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ১০ জুন, ২০২৪

চক্রের তৎপরতায় প্রতারিত পাসপোর্ট যাত্রীরা

দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর বেনাপোল। ভারত-বাংলাদেশের প্রধান প্রবেশদ্বার বেনাপোল চেকপোস্ট। এ পথে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার পর্যটক যাতায়াত করে থাকে। এ পথে প্রতিদিন পাসপোর্টযাত্রীরা নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের চেকপোস্ট এলাকায় ভারত গমন পাসপোর্টযাত্রীদের কাছ থেকে নানা কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত কিছু উঠতি বয়সের ও নেশাগ্রস্ত যুবকরা। এরা দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্টযাত্রীদের আগে ইমিগ্রেশন কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে টাকা হাতিয়ে নেয়। আবার অনেকে ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। এ কারণে চেকপোস্ট এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীরাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে শুরু করে বড় আঁচড়ার বাগে জান্নাত এতিম খানার আগ পর্যন্ত শতাধিক দালাল এসব কাজ করে থাকে। বেনাপোল লোকাল বাসস্ট্যান্ড, ঢাকার বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশনে এসব দালাল যাত্রীদের নানা মিষ্টি কথা বলে আগে পার করে দেওয়া হবে এসব বলে চেকপোস্টের বিভিন্ন স্টোর ও এন্টারপ্রাইজ নামের দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে বসিয়ে নানাভাবে হাতিয়ে নেয় টাকা। মাঝে মধ্যে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ এদের আটক করলেও এরা আবার আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে এসে একই কাজ করে থাকে।

এসব প্রতারক চক্র পাসপোর্ট যাত্রীদের কত টাকা আছে এবং টাকার নাম্বার লাগবে অনলাইন করতে। বিভিন্ন কৌশলে তাদের টাকা নিজ হাতে নিয়ে গুনতে গুনতে চোখের পলকে ড্রয়ারের মধ্যে ফেলে দেয়। এরপর দ্রুত তাদের কাছে টাকা দিয়ে বলে লাইন সিরিয়ালের আগে যান। এ কথা বলে এ চক্রের সদস্যরা তাদের ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসে। অনেকে ভারত গিয়ে টাকা গুনে তাদের টাকা কম পাওয়ায় ফিরে আসার সময় পুলিশের সহযোগিতা নেয়। আবার অনেকে ইমিগ্রেশনে গিয়ে টাকা গুনে কম হলে ফেরত এসে টাকা উদ্ধার করে। আবার অনেকে চলে যায়। এভাবে প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছে যাত্রীরা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন যাত্রীরা প্রতারিত হওয়ায় আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছি। কিছু নির্দিষ্ট গলিতে যাত্রীরা প্রতারণার শিকার হওয়ায় আমাদের অনেক সময় জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হয়। কারণ এসব প্রতারকরা আমাদের দোকানের আশপাশে এসব কাজ করে থাকে। নেশাগ্রস্ত এসব প্রতারকদের কিছু বলাও যায় না। কারণ এরা যেকোনো সময় যে কাউকে ছুরি মারতে দ্বিধাবোধ করবে না। তবে পুলিশ প্রশাসনসহ বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকায় কর্মরত বিভিন্ন কর্মরত সরকারি সংস্থার লোক একটু সচেতন হলে এদের রোধ করা সম্ভব।

বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় এসব টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার কারণে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। যার কারণে এসব বন্ধ করতে বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালকের পক্ষ থেকে বেনাপোল পোর্ট থানাসহ কমপক্ষে সরকারি ২০টি সংস্থার কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন।

এ বিষয় বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি সুমন ভক্ত বলেন, এ ধরনের ঘটনায় এরই মধ্যে কয়েক দফায় প্রতারকদের আটক করে জেল হাজাতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন ভোর বেলায় বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় পুলিশ টহল দল কাজ করছে। ওই এলাকায় কেউ প্রতারিত হলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। অনেক যাত্রীর টাকাও উদ্ধার করে দেওয়া হয়েছে। তবে দালাল চক্র একেবারে নির্মূলের জন্য পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম বলেন, আমরা চাই বন্দর এলাকা পরিচ্ছন্ন। আমি এ বিষয়ে বন্দরে নিয়োজিত এপিবিএন পুলিশ, আনসার, পিমা (বেসরকারি সিকিউরিটি) সবাইকে সাচেতন থাকার নির্দেশ দিয়েছি। বেনাপোল পোর্ট থানাসহ অন্তত ২০টি জায়গায় চিঠি প্রদান করেছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close