রাহাত চৌধুরী, জাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিলের দাবি
![](/assets/news_photos/2024/06/08/image-461229.jpg)
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায় বাতিলের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত কার্যক্রমে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তারা কোটাব্যবস্থাকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ। এতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যখনই কিছু হয়েছে, তখনই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে এ সাধারণ শিক্ষার্থীরাই প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল এখন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। অন্যায্য এ কোটা বন্ধ করা হোক।’
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহের আফরোজ শাওলি বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে আনার জন্য মূলত কোটাব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী), নারী বা প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হতে পারে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কোটার মতো কোটা প্রচলন করে, সরকারি চাকরির ৫৬ ভাগ যখন অল্প কিছু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তখন উঁ”ু জাত ও নিচু জাতের সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণরা নিপীড়িত হতে পারে। একটি গোষ্ঠী তাবেদারি করে কোটা নিয়ে লাভবান হচ্ছে। এ আন্দোলনে সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সমতাণ্ডসাম্যের জন্য লড়াই করা উচিত।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘আমরা এ বৈষম্যমূলকব্যবস্থার অবসান চাই। সারা পৃথিবীতে যেখানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা হয়, সেখানে বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে কোটা প্রচলন করে ডাকাতি করা হয়। যখন কোনোপ্রকার জনগোষ্ঠী সুবিধাবঞ্চিত না হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য কোটা রাখা হয়, তখন সাম্য ও মানবিক মর্যাদা কোথায় থাকে? রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অযোগ্যদের জায়গা করে দিলে সামাজিক সুবিচার কোথায় থাকে? আমরা এসব বৈষম্যমূলকব্যবস্থা চাই না।’
আরিফ সোহেল আরো বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জান বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, কোনো টাকা বা সম্পদের প্রলোভনের সঙ্গে আপস করেননি। আমাদের লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে প্রমাণ করে দিতে চাই, আসল মুক্তিযোদ্ধা কারা। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূলনীতি বাস্তবায়নের জন্য অবিলম্বে এ কোটা বাতিল করতে হবে।’
"