নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১৬ মে, ২০২৪

‘১ ব্যক্তি -১ খতিয়ান -১ দাগ’

ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল জরিপের লক্ষ্য হচ্ছে, ‘১ ব্যক্তি, ১ খতিয়ান ও ১ দাগ’ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এর বাস্তবায়ন হলে ভূমিবিষয়ক নাগরিকদের হয়রানি ও মামলা-মোকদ্দমার পরিমাণ অনেকাংশে কমবে। কোথাও যদি দেখেন কেউ স্বার্থসংশ্লিষ্টতার কারণে আপনাদের ভূমি বঞ্চিত করেছে। সেক্ষেত্রে আপনারা অভিযোগ করবেন। আমরা সেগুলো তদন্ত করব এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসক এটার সমাধান দিতে পারবেন। আমি আশা করব, এটা সেই পর্যায়ে সমাধান হবে। সর্বোপরি ডিজিটাল ভূমি জরিপের ক্ষেত্রে কেউ অধিকার বঞ্চিত হলে আমরা দেখব।

মন্ত্রী আরো বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ডিজিটাল জরিপ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি জানান, আগামী জুলাই থেকে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের ৬টি এলাকায় বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপের আওতায় ম্যাপ প্রস্তুতকরণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে, যা দ্রুত সফলভাবে শেষ হবে। যোগাযোগ ও প্রচারণা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিডিএস অপারেশনে নাগরিকদের ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ডিজিটাল ভূমি জরিপ ও ভূমি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ (বিডিএস) আওতাভুক্ত অন্যতম ‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ প্রকল্প সেমিনারটি আয়োজন করে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। ইডিএলএমএস প্রকল্প পরিচালক মো. জহুরুল হক বিডিএস বিষয়ে এক সচিত্র উপস্থাপনা করেন।

এ সময় ভূমিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমে এ দেশ পেয়েছি, এ ভূমি পেয়েছি। তিনি স্বল্প সময়ে তার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। তার সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনি দেশকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই একটি ফ্রেশ ও সুন্দর ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আসতে। আমরা চেষ্টা করছি মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ডিসি এবং ভূমি পর্যন্ত যাওয়ার। ভূমির ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের মাঝে আজকে আমার বার্তাটাও থাকবে তাদের সিনসিয়ার এবং সৎ হয়ে চলতে হবে। এখানে যদি কোনো ত্রুটি ঘটে এবং সেটি প্রমাণিত হয় সেখানে কিন্তু কঠিন আইনগত ব্যবস্থা নেব। সে ক্ষেত্রে আমরা কাউকে ছাড় দেব না’।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘পাবলিকেরও কিন্তু সিনসিয়ার হতে হবে। কেন টাকা দিয়ে আমি রেকর্ড করব। রেকর্ড আমার বৈধ যতটুকু সেটুকু আমার অধিকার। সেই অধিকার বঞ্চিত হলে আমরা দেখব আমরা কথা দিচ্ছি’।

এ সময় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৪ সালে প্রদত্ত ৩১টি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার অন্যতম বাস্তবায়ন হিসেবে ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশন ও বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ (বিডিএস) কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে ভূমি সম্পর্কিত লেনদেন অনলাইনে সম্পন্ন হওয়ায় দুর্নীতির আশঙ্কা অনেকাংশে কমে এসেছে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সেমিনারে বলেন, বিডিএস অপারেশনে কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হবে। জরিপের সময় যদি সিলিংবহির্ভূত জমি পাওয়া যায়, তাহলে অতিরিক্ত জমি খাস খতিয়ানে এনে বাকি জমি ব্যক্তির নামে রেকর্ড করা হবে। আর সরকারি জমির ক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালতের রায় অনুযায়ী কাজ করা হবে। তাছাড়া বিডিএসের আওতায় তৈরিকৃত ডিজিটাল ম্যাপে ক্লিক করলেই জমির সব তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়াও রেকর্ড সংশোধন করলে ডিজিটালি ম্যাপ পার্টিশন হয়ে যাবে। সেমিনারে ডিএলআরএস পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল কাদের শেখ, ডিএলআরএস পরিচালক মো. মোমিনুর রশীদ, ঢাকার জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মিজানুর রহমানসহ ভূমি মন্ত্রণালয়, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ও ইডিএলএমএস প্রকল্প এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আগত প্রকল্পের সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close