ইবি প্রতিনিধি

  ১৫ মে, ২০২৪

শিক্ষার্থী-স্থানীয়দের সংঘর্ষে আহত ৭

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সংলগ্ন মেসের বিদ্যুৎ বিল চাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসসংলগ্ন নূরজাহান মহিলা হোস্টেলে এ ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। এ হোস্টেলের মালিক নায়েব আলী জোয়াদ্দার। তিনি ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি প্রার্থী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই হোস্টেলে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেফতাহুল জান্নাত ফারিয়া। ওই ছাত্রীর গত ৪ মাসের বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় ম্যানেজার বিবেক বিশ্বাস বিল দিতে বলেন। ওই ছাত্রী বিল পরিশোধ করতে গেলে উভয়ের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে মেস ছেড়ে দিতে বলেন ম্যানেজার। ওই ছাত্রী বিভাগের বন্ধু আবু হানিফ পিয়াসকে বিষয়টি জানান।

পিয়াসসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ম্যানেজার ও নিরাপত্তাকর্মী ইসলাম জোয়াদ্দারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মাঝে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয় লোকজন মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে সমাজকল্যাণ বিভাগের সাকিব আলী, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আবু হানিফ পিয়াস, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের নাইম রেজা, ইংরেজি বিভাগের হৃদয় আবির, স্থানীয় আশিক ও সাংবাদিকসহ ৭ জন আহত হন। এদিন রাত ১০টায় শৈলকুপা থানার রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির দুই পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় মাতব্বররা মিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সমাঝোতা করে দেন।

এ বিষয়ে মেফতাহুল জান্নাত ফারিয়া বলেন, সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ বিল দিতে গিয়েছিলাম। টাকা নেওয়ার সময় ম্যানেজার বাজে ইঙ্গিত ও স্পর্শ করার চেষ্টা করেন। পরে ওনার হাতে টাকা না দিয়ে ছুড়ে দিই। তখন আমাকে ‘বেয়াদব মেয়ে’ বলে সম্বোধন করেন এবং পরিবারের নম্বর চান। এরপর ধমক দিয়ে মেস ছেড়ে দিতে বলেন। পরে আমি বিষয়টি আমার বিভাগের বন্ধু পিয়াসকে জানাই। বন্ধু পিয়াস বিষয়টি নিয়ে ম্যানেজার সঙ্গে কথা বলতে গেলে নিরাপত্তাকর্মী তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। পরে অন্য বন্ধুরা এলে তাদের স্থানীয় লোকজন তাদের মারধর করেন। তিনি আরো বলেন, আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তাই নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেব। পাশাপাশি হল প্রভোস্ট বরাবর সিটের জন্য আবেদন করব।

আহত সহপাঠী আবু হানিফ পিয়াস বলেন, আমাদের বান্ধবীর সঙ্গে কিছুদিন ধরে মেস ম্যানেজার বাজে ব্যবহার করে আসছিলেন। বিভিন্ন সময় মেস ম্যানেজার তাকে বাজে ইঙ্গিত দেন। আজও আমার বান্ধবীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে আমরা কয়েকজন সেখানে যাই। পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিবেক আমার এক বন্ধুকে চড় মারেন। পরে আমরা উত্তেজিত হয়ে পড়ি। এ সময় স্থানীয় লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে আমাদের ওপর চড়াও হন। নূরজাহান মেসের ম্যানেজার বিবেক বিশ্বাস বলেন, ওই মেয়ে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করছে, সেগুলোর কোনো সত্যতা নেই। আমি তার সঙ্গে এমন কোনো আচরণ করিনি।

এ বিষয়ে রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনা শোনার পরপরই আমরা এখানে এসেছি। উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। তবে কেউ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানালে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমি এখনো কোনো পক্ষেরই লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close