ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৩ মে, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে টাইগারদের হার

শান্তদের আনকোরা যুক্তি আর কতকাল!

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় লড়াইয়ের জন্য পুঁজি মিলল সাদামাটা। এরপর শেষ ২৪ বলে ৫৫ রানের সমীকরণ রক্ষা করতে পারলেন না বোলাররা। কোরি অ্যান্ডারসন ও হারমিত সিংয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সামনে উড়ে গেলেন টাইগাররা। ফলে শক্তির বিচারে অনেক পিছিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের কাছে ধরাশায়ী হলো বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রথম দেখাতেই তাদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের স্বাদ পেল যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারটা কোনোভাবেই হজম হচ্ছে না বাংলাদেশের সমর্থকদের। গত মঙ্গলবার রাতের ওই বিপর্যয়ের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় চলছে সমালোচনার ঝড়। বাংলাদেশের হারের পেছনে শেষ দিকের বোলিংয়ের বড় দায় থাকলেও আসল সর্বনাশ হয় ব্যাটিংয়েই। টপ অর্ডার ব্যাটাররা আবারও ব্যর্থ হন। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কদিন আগে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কঠিন উইকেটে খেলার প্রসঙ্গ আনলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ এমন এক দলের সঙ্গে হারল যারা ক্রিকেটে বাচ্চা হিসেবে এখনো পরিচিতি। অথচ বাংলাদেশ কিনা তাদের সঙ্গে হেরে বসলো। খেলায় হার জিত ছিল থাকবে। কিন্তু হার জিতের গুরুত্বপূর্ণ কারণ থাকে। বাংলাদেশের বর্তমান পারফম্যান্সে ক্রিকেট ভক্তদের হতাশা ছাড়া আর কিছু নেই। বাংলাদেশের কাপ্তন নাজমুল হোসেন শান্ত হারের পর যেসব যুক্তি পেশ করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা তা মেনে নিতে পারছেন না। কারণ এবাবে একটা দেশের ক্রিকেট চলতে পারে না। শান্তদের আনকোরা যুক্তি আর কতকাল শুনতে হবে ভক্তদের! স্বপ্নে মঞ্চে এরকম হতশ্রী পারফরম্যান্সে কতদূর যাবে বাংলাদেশ দল সেটাই এখন দেখার বিষয়।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে প্রথম তিন ম্যাচ চট্টগ্রামে খেলে বাংলাদেশ। তাতে আসেনি বড় রান। ঢাকায় শেষ দুই ম্যাচেও তাই। সাধারণত চট্টগ্রামে রান বান্ধব উইকেট থাকলেও এবার ভিন্ন কিছু ছিল বলে তখনই হতাশা জানিয়েছিলেন শান্ত। মন্থর, কঠিন উইকেটে খেলে ব্যাটারদের হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাসের জমিন এখনো নড়বড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৫ উইকেটে হেরে যাওয়ার পর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শান্ত তাই চলে গেলেন পেছনে, ‘আমরা ভালো ব্যাট করিনি। শুরুটা ভালো হয়েছিল কিন্তু মাঝে কিছু উইকেট হারিয়ে ফেলি। আমরা যদি আরো ২০ রান বেশি করতাম তাহলে ভালো পুঁজি হতো।’ আমার মনে হয় জিম্বাবুয়ে সিরিজে আমরা ভালো উইকেটে খেলিনি, ব্যাটাররা খুবই সংগ্রাম করেছে। কিন্তু সবই মানসিকতার ব্যাপার, আশা করছি ব্যাটাররা ছন্দ ফিরে পাবে।

টস হেরে আগে ব্যাট করে টাইগাররা পায় ৬ উইকেটে ১৫৩ রানের সংগ্রহ। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতে ১৫৬ রান তুলে স্মরণীয় জয়ের উল্লাসে মাতে স্বাগতিকরা। অথচ ১৫তম ওভারে ৯৪ রানে পড়ে গিয়েছিল তাদের পঞ্চম উইকেট। হারমিত দুই চার ও তিন ছক্কায় ১৩ বলে খেলেন ৩৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। নিউজিল্যান্ড থেকে অবসর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দলে নাম লেখানো অ্যান্ডারসনের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে দুই ছক্কায় ৩৪ রান। দুজনই থাকেন অপরাজিত। ষষ্ঠ উইকেটে তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে মাত্র ২৮ বলে আসে ৬২ রান। হৃদয়ের ব্যাটে ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের ১৫৩ রানের পুঁজি।

২৬তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নিঃসন্দেহে এটি তাদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে আইসিসির টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিপক্ষে কেবল একটি জয়ই পেয়েছিল তারা, ২০২১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। অন্যদিকে, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এ হার বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসে দিতে পারে বড় ধাক্কা।

ডেথ ওভারে বাংলাদেশের বোলিং ছিল ছন্নছাড়া। ১৭তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান দুই ছক্কাসহ দেন ১৭ রান। দুটিই মারেন ভারতে জন্ম নেওয়া বাঁহাতি হারমিত। তখন থেকেই একটু একটু করে ম্যাচ ফসকে যেতে শুরু করে সফরকারীদের আঙুল থেকে। পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম ১৪ রান খরচ করেন। ওই ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান হারমিতই। মুস্তাফিজ আক্রমণে ফিরলে তার পঞ্চম বল সীমানাছাড়া করার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের করা শেষ ওভারের প্রথম বলেও আধা ডজন রান আনেন অ্যান্ডারসন। ফলে ৬ বলে ৯ রানের সমীকরণ নেমে আসে ৫ বলে ৩ রানে। অ্যান্ডারসন পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন হারমিতকে। তিনি এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মেরে শেষ করে দেন খেলা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close