ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২০ মে, ২০২৪

বড় ট্রফির আক্ষেপ ঘোচবে কি মুস্তাফিজের

ঘুরে ঘুরে বিশ্বকাপ আসে আর যায়। প্রতি বিশ্বকাপ আসলে ভক্তরা আশা নিয়ে স্বপ্ন বুনে বিশ্বকাপ থেকে এই বুঝি শিরোপা আসবে লালা-সবুজের দলে। প্রতিবারেই প্রত্যাশা বাণী শুনিয়ে যায় বিশ্বমঞ্চে। দেশে ফিরে আসে একরাশ হতাশা নিয়ে। এই হতাশার মিছিল শুধু বড় হচ্ছে! কবে ধরা দেবে আলো হয়ে স্বপ্নের শিরোপা। শুধু কি আক্ষেপ ক্রিকেট ভক্তদের। না, সেই আপেক্ষ খেলোয়াড়দের মনেও। বিশ্বকাপের আগে মুস্তাফিজ জানালেন টি-টোয়েন্টি ঘিরে তার ভাবনার কথা।

বেশির ভাগ ক্রিকেটার টেস্ট ক্রিকেটকেই সবচেয়ে ওপরে রাখেন। তবে কুলীন সংস্করণ নয় মুস্তাফিজর রহমানের বেশি পছন্দ টি-টোয়েন্টি। বাঁহাতি এই পেসার লাল বল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সেই বার্তা অবশ্য আগেই দিয়েছিলেন। মুস্তাফিজ থেকে ফিজ হয়ে ওঠার পেছনের গল্প। টি-টোয়েন্টি দিয়েই ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক মুস্তাফিজের। যদিও বেশি সাড়া ফেলেন শুরুতে ওয়ানডেতে, ভারতকে হারিয়ে। পরে খেলেছেন সব সংস্করণেই। মাত্র ১৪ টেস্টই থমকে গেছেন, লাল বল থেকে নিজেকে দূরে নিয়ে গেছেন স্বেচ্ছায়।

১০৩টি ওয়ানডে আর ৯২ টি-টোয়েন্টি খেলা মুস্তাফিজের যে সীমিত ওভারই বেশি পছন্দ, তা বোঝাই যায়। ফ্র্যাঞ্জাইজি ক্রিকেটেও প্রচুর টি-টোয়েন্টি খেলা পেসার জানালেন তার কাছে বেশি চাপের মনে হয় ২০ ওভারের লড়াই, এটাই উপভোগ করেন তিনি, ‘ভালো লাগার প্রসঙ্গ এলে আমি টি-টোয়েন্টি খুব পছন্দ করি। এই সংস্করণে চাপ বেশি। এ কারণেই মনে হয় আমার ভালো লাগে। আমি চাপটা অনেক উপভোগ করি।’ আইপিএলে নিয়মিত মুখ হলেও দেশের হয়ে খেলেই বেশি গর্ব অনুভব করেন মুস্তাফিজ। দেশের হয়ে বড় কিছু অর্জনের আক্ষেপও শোনা গেল বিসিবির প্রকাশিত ভিডিওতে, ‘দেশের হয়ে খেলা তো একটা গৌরবের বিষয়। আমি সব সময় দেশের হয়ে খেলাটা উপভোগ করি। আমার মনে হয় যখন কোনো বড় টুর্নামেন্ট হয়, কোনো বড় ট্রফি জেতে; তখন বড় খেলোয়াড় বলা হয়। এই আক্ষেপ তো সবসময় রয়েই গেছে।’

মুস্তাফিজকে সারা বিশ্ব এখন শুনে ফিজ নামে। এই ফিজ নামকরণের পেছনের গল্প জানিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের শুরুতে জাতীয় দলের অনুশীলনের সময় হোয়াইট বোর্ডে কোচদের নাম লেখার সুবিধার্থেই তার নাম হয়ে যায় ফিজ, ‘আমাদের যে বোর্ডটা আছে- ফিল্ডিং সেশন, বোলিং সেশনের বিষয় লেখা থাকে। ওই বোর্ডে যদি পুরো নাম লেখে, তাহলে অনেক বড় হয়ে যায়। এ কারণে লেখে ফিজ। প্রথম দিন আমি বুঝিনি। ভেবেছি এটা কে। তারপর আমাকে বলেছে, এটা তুমি। এরপর থেকেই এরপর আমি আইপিএলে খেলতে গিয়েছিলাম ২০১৬ সালে। ওখানেও ফিজ নামটা জনপ্রিয় হয়ে গেছে। এরপর থেকেই চলছে।’ মুস্তাফিজ নিজের ধার বাড়াতে সব সময় কথা বলেন সতীর্থদের সঙ্গে। একেকজনের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে ঋদ্ধ হন তারা। পরামর্শ নেন সিনিয়রদের কাছ থেকেও, ‘আমাদের যে পেস বোলাররা আছে তাসকিন, শরীফুল, সাইফউদ্দিন (বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি), হাসান মাহমুদ। আমি যেটুকু শিখেছি, সেটা ওদের সঙ্গে ভাগাভাগি করব। এতে যদি আমাদের আরেকটু উন্নতি হয়। সাকিব ভাই আছে, রিয়াদ ভাই আছে। আমরা যদি কখনো আটকে যাই, মাঠে হতে পারে বা কোনো কিছু জানার থাকলে ভাইদের কাছ থেকে সিদ্ধান্তগুলো নিতে পারব।’

এদিকে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে হেরে আইপিএলের এবারের আসর থেকে বিদায় নিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। ২৭ রানের ব্যবধানে হারের পর বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে মিস করার কথাটা মুখ ফুটেই বলে ফেললেন চেন্নাই অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়ার। আসরের শুরু থেকে চোট সমস্যা লেগেই ছিল চেন্নাইয়ের। ওপেনার ডেভন কনওয়ে চোটের কারণে খেলতে পারেননি। শুরু থেকে খেলা হয়নি পেসার মাথিশা পাথিরানার। মুস্তাফিজুর শুরু থেকেই ছিলেন চেন্নাইয়ের একাদশে। বেশ ভালোও করছিলেন। তবে আইপিএলের মাঝপথে দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে বোলার সংকটে ভুগেছে চেন্নাই। ম্যাচ হারের পর তাই আক্ষেপ ঝরে পড়ল চেন্নাই দলনেতার কণ্ঠে। ম্যাচণ্ডপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঋতুরাজ বলেন, ‘এটা ভালো উইকেট ছিল। স্পিনারদের জন্য এখানে টার্ন এবং গ্রিপ হচ্ছিল। লক্ষ্য নিয়ে আমরা বেশ খুশি ছিলাম। এই মৌসুমে ১৪ ম্যাচের মধ্যে ৭ ম্যাচ নিয়ে খুশি।’

‘চোট এবং কনওয়ের না থাকা অনেক পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। প্রথম ম্যাচ থেকেই চ্যালেঞ্জ ছিল। পাথিরানা চোটে ছিল, আমরা ফিজকেও মিস করেছি। যখন আপনার চোটসমস্যা থাকবে তখন দলের ভারসাম্য ধরে রাখা কঠিন হবে। দিনশেষে জেতাটাই আসল পুরস্কার। আমরা তা করতে পারিনি ফলে আমি কিছুটা হতাশও হয়েছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close