যে দল এক বছর আগেও শিরোপা তো দূরে থাক, জয় নিয়েই ভাবতেন অনেক বার! সেই বায়ার লেভারকুসেন এবার বুন্দেসলিগার চ্যাম্পিয়ন। শুধু চ্যাম্পিয়ন বললে কমই বলা হবে। এ ক্লাবটিই এখন ইউরোপের অন্যতম শাসক। যারা কিনা একটানা ৪৯ ম্যাচে অজেয় থাকার রেকর্ড গড়েছে। এমন বাধাহীনভাবে ছুটে চলার সুযোগ আর ক’টা ক্লাবের হয়। এখন থেকে ঠিক ৬০ বছর আগে পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকা এভাবে ঝড়ের বেগে ছুটে চলছিল। তাদের সামনে যে প্রতিযোগিতাই পড়ত, কিছুতেই থামানো যেত না। এতদিন তারাই ছিল সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অপ্রতিরোধ্য থাকতে। এবার তাদের ছাড়িয়ে গেল জাভি আলোনসোর দল।

ইউরোপা লিগের সেমিতে দুই লেগ মিলিয়ে রোমাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে। এখন তাদের সামনে দুটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ। ইউরোপা লিগ, আরেকটি জার্মান কাপ। তেমনটা হলে ঘরোয়া ট্রেবল জয়ের স্বাদও পাবে বায়ার।

এমন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন ক্লাবটির কোচ আলোনসো। তিনি তো এবার তিনটি ট্রফি একসঙ্গে দেখার অপেক্ষায়। যার একটি বুন্দেসলিগা এরই মধ্যে জেতা হয়ে গেছে। বাকি দুটি জিতলে মৌসুমটা হবে বর্ণিল। কারণ ১১৯ বছরের ইতিহাসে এতটা দারুণ সময় আগে কখনো আসেনি বায়ারের। এবারের আগে শতবর্ষ পার করা ক্লাবটি তিনটি শিরোপা জেতে। যার একটি জার্মান কাপ। সেটাও ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে। তারও আগে ইউরোপা লিগ ঘরে তোলে ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে। জার্মানির শীর্ষ লিগে খেলা এ ক্লাবটি এতদিনেও পায়নি নিজেদের সেরা সাফল্য। এবার আলোনসো আসার পর সব কিছুই যেন বদলাতে থাকে।

তাই তো ক্লাবটির এগিয়ে যাওয়ার গল্প বলতে গেলে আলোনসোকে নিয়ে বলতেই হবে। রিয়াল মাদ্রিদ, লিভারপুল, বায়ার্ন মিউনিখে খেলেছেন একটা সময়। সেখান থেকে কোচিংয়ে হাতেখড়ি রিয়াল সোসিয়েদাদের বি টিম দিয়ে। এরপর ২০২২ সালে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় বায়ার লেভারকুসেনকে। যদিও প্রথম দিকটা তার জন্য ছিল বেশ কঠিন। দলটা গোছাতে অনেকটা সময় ব্যয় করে ফেলেন। তবে বছরের পর বছর হতাশ হওয়া ক্লাবটি এবার আশা দেখেছিল আলোনসোকে পেয়ে। তিনিও আর কাঁদতে দেননি। এবার ঠিকই পুরোনো সব হিসাব চুকিয়ে দেন দারুণভাবে।

বায়ার্ন-ডর্টমুন্ডের মতো ক্লাবের রাজত্ব ভেঙে জার্মান লিগের মুকুট নেন সবার আগে। এবার আরো দুটি শিরোপার সুবাস নিয়ে রঙিন স্বপ্ন বুনেছেন হৃদয়ে। গত বৃহস্পতিবার শেষের ঝলকে রোমাকে স্তব্ধ করে দিয়ে আলোনসো শুনিয়েছেন আরো এগিয়ে যাওয়ার কথা, ‘এখন আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি ফাইনাল খেলব। রোমার বিপক্ষে দ্বিতীয় গোলের পর আমরা নিজেদের চরিত্র দেখাতে পেরেছি। আমি আমার ছেলেদের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখেছি, ওরা আরো চায়। আমাদের এখনো তিনটি ট্রফি জেতার সুযোগ আছে। আমার ছেলেরা ৩ টিই জেতার যোগ্য।’

"