ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

নাহিদের গতির ঝড়ে লণ্ডভণ্ড মোহামেডান

সূর্যের চোখরাঙানিতে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা দায়। এর মধ্যে হঠাৎ করে শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়। তারও আগে নাহিদ রানার গতির ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে মোহামেডান শিবির। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি আইনে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সাদা-কালো শিবির।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার মুখোমুখি হয় মোহামেডান-শাইনপুকুর। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে নাহিদ রানার ফাইফারে ৯ উইকেটে ২২৭ রান করে মোহামেডান। তাড়া করতে নেমে ২৭.৪ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় শাইনপুকুর। ১০ রাউন্ড শেষে শাইনপুকুরের এটি সপ্তম জয়, অন্যদিকে সমান রাউন্ডে মোহামেডানের তৃতীয় হার। মোহামেডানের রান তাড়া করতে নেমে সঠিক পথেই চলছিল শাইনপুকুরের ইনিংস। ২৪.৩ ওভারে শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়। বৃষ্টি ও আলোকস্বল্পতার কারণে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় দুই ঘণ্টা। বৃষ্টি গেলে শাইনপুকুরের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৩ বলে ৩৬ রান। মোহামেডানের এলোমেলো বোলিংয়ে ১৪ বল আগেই জিতে যায় শাইনপুকুর। খেলা মাঠে না গড়ালেও ফল হতো একই।

আকবর আলী ২৭ ও ইরফান শুক্কুর ১১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। সর্বোচ্চ ৩৬ রান আসে তানজীদ হাসান তামিমের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া জিসান আলম ২৬, মার্শাল আইয়ুব ৩০ রান করেন। মোহামেডানের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন আবু হায়দার রনি, নাঈম হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেন ১টি করে উইকেট। এর আগে মোহামেডানের ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি। ৩১ রানে দলটি হারিয়ে ফেলে ২ উইকেট। শূন্য রানে ফেরেন ফর্মে থাকা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ৭০ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দেন ইমরুল কায়েস। ফিফটির পর ৫৬ রানে ইমরুল আউট হলে ভাঙে জুটি। মিরাজও ফেরেন ২৯ রানে। মাঝে ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড় দলটি। এরপর ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান আবু হায়দার রনি-আরিফুল হক। দুজনে ফিফটির জুটিতে দলীয় সংগ্রহ দুইশ পার করেন। রনি ৫১ ও আরিফুল ৩০ রান করেন। শেষে নাঈম হাসান ১২ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। শাইনপুকুরের হয়ে একাই ৫ উইকেট নেন রানা। তিনি ৪৫ রান দিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইফার নেন। তার হাতে ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কার। এ ছাড়া ২ উইকেট পান হাসান মুরাদ।

এদিকে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ঝলমলে পারফরম্যান্স দেখালেন নাহিদ রানা। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে তিনি নিলেন ৫ উইকেট। ছয় ম্যাচের লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে এটি তরুণ ডানহাতি পেসারের সেরা বোলিং নৈপুণ্য। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ৪৫ রান খরচায় নাহিদ শিকার করেন ৫ উইকেট। সবগুলো উইকেটই নেন প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ক্যাচ বানিয়ে। ১০ ওভারের কোটা পূরণের পথে তিনি ডট দেন ৪১টি বল। আগের ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৫৪ রানে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট। ফলে চলতি আসরে স্রেফ দুই ম্যাচ খেলে ৯ উইকেট হয়ে গেল তার নামের পাশে।

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি ২১ বছর বয়সি গতিময় পেসার নাহিদের দ্বিতীয় ৫ উইকেট। সিলেটে গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা বোলারের আগের সেরা পারফরম্যান্স ছিল উত্তরাঞ্চলের হয়ে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে। গত বছরের ডিসেম্বরে বিসিএল ওয়ানডে লিগের ফাইনালে তিনি ৫ উইকেট নিয়েছিলেন ৫০ রান খরচায়। তার চমৎকার বোলিংয়ের পর ব্যাটারদের অবদানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল উত্তরাঞ্চল। তিনি জিতেছিলেন ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে এদিন ম্যাচের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেটের উল্লাসে মাতেন নাহিদ। শাইনপুকুরকে এনে দেন প্রথম ব্রেক থ্রু। তার বাড়তি বাউন্স হওয়া অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে আউটসাইড এজ হয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন মোহামেডানের ওপেনার রনি তালুকদার। নিজের পরের ওভারে আরেক শিকার ধরেন নাহিদ। ফাইন লেগে ক্যাচ দেওয়া মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন খুলতে পারেননি রানের খাতা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close