ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

লিড নেওয়া চ্যালেঞ্জিং দেখছেন কিউইরা

খেলাটা কি তৃতীয় দিনে যাবে?- এ প্রশ্ন শুনে হেসে দিলেন মিচেল স্যান্টনার। প্রথম দিন শেষে ম্যাচের যা পরিস্থিতি, দুদিনে খেলা শেষ হবে না- কে আর ভরসা দিয়ে বলতে পারে! শুরু থেকেই বল ঘুরছে, বাউন্স মিলছে। স্পিনারদের বল সামলানো ভীষণ কঠিন লাগছে ব্যাটারদের। এ অবস্থায় ১৭২ রান করেও ম্যাচে বেশ ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ। স্যান্টনার মনে করছেন, এ অবস্থা থেকে ম্যাচে ফিরতে নতুন বলটা সামলে গড়তে হবে কিছু কার্যকর জুটি। মিরপুরে গতকাল বুধবার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনে ১৫ উইকেট পড়েছে। রান উঠেছে ২২৭। বাংলাদেশকে ১৭২ রানে গুঁড়িয়েও স্বস্তিতে নেই সফরকারীরা। ১৩ ওভারের মধ্যে ৫৫ রানে তাদের নেই ৫ উইকেট।

এদিন দুই দলের ইনিংসেই নতুন বল দেখা গেছে ভয়ানক। স্পিনাররা নতুন বলে ব্যাটারদের পরিস্থিতি করে দিয়েছেন নাজেহাল। বাংলাদেশ ৪৭ রানে হারায় ৪ উইকেট। পরে মুশফিকুর রহিম আর শাহাদাত হোসেন দিপু গড়েন ৫৭ রানের জুটি। অর্থাৎ বল খানিকটা পুরোনো হওয়ার পর খেলাটা হয়েছে কিছুটা সহজ। প্রথম ৫ ওভার পার কলেও কিউইরা নতুন বলেই ঘায়েল। তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজদের সামনে কোনো জবাব খুঁজে পাননি টম ল্যাথাম, কেন উইলিয়ামসনরা। বল ছেড়ে বোল্ড হয়েছেন কনওয়ে, দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে ক্যাচ দিয়েছেন উইলিয়ামসন।

দিনের খেলা শেষে দলের হয়ে কথা বলতে এসে বোলিংয়ে ৩ উইকেট নেওয়া স্যান্টনার বলেন, নতুন বলই সামলানোই ব্যাটারদের জন্য কঠিন কাজ, ‘আমারও তাই মনে হয় (নতুন বল সামলানো কঠিন কিনা)। আমাদের বোলিং ইনিংসের বেলায়ও দেখেছি। বল যখন নতুন ছিল অনেক গতিতে যাচ্ছিল। বল পুরোনো হতে একটু মন্থর হয়েছে। আপনি যদি নতুন বল খেলে দিতে পারেন, নিজেদের যদি প্রয়োগ করা যায়, তাহলে আশা করি, খেলাটা সহজ হবে। কিন্তু হ্যাঁ, আমরা এর মধ্যেই চরম বিপদে।’ বাংলাদেশের থেকে এখনো ১১৭ রান পিছিয়ে নিউজিল্যান্ড।

হাতে আছে ৫ উইকেট। এ অবস্থায় লিড পেতে ছোট ছোট জুটির আশায় স্যান্টনার, ‘আমরা জানি, চ্যালেঞ্জিং হবে (লিড পাওয়া)। আমরা জুটি নিয়ে আলাপ করছি। এখানে হয়তো ৮০-৯০ রানের জুটি হবে না। হয়তো দ্রুত ৩০ রানের জুটিও কাজের হতে পারে। এরকম কিছু জুটি গড়ে রানটা সমান করার দিকে নিতে হবে। এরপর দেখা যাক। আগামী দিনগুলোয় কঠিন লড়াই সামনে, সন্দেহ নেই।’ আমার মনে হয় শুরুতে একটু আঠালো মনে হয়। তারপর বল অনেক কিছু করতে থাকে। স্পিনারদের জন্য অনেক অনেক কিছু আছে। যেটা ভালো। আমাদের নিজেদের প্রয়োগ করতে হবে। আমরা যদি সেটা করতে পারি, বলটাকে পুরোনো হতে দিই। তাহলে সহজ হবে। তারপরও বলব কাজটা কঠিন।

এদিকে প্রথম দিন শেষে তাই চালকের আসনে বাংলাদেশই। কিন্তু তারপরও সব আলোচনা ওই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের আউট নিয়ে। সতীর্থ মিরাজ বললেন, খেলার ‘ফ্লো’তে এমনটা করে ফেলেছেন মুশফিক। মিরপুর চিরাচরিত স্পিনবান্ধব উইকেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ সংগ্রাম করছিল বাংলাদেশ। ৪৭ রানেই হারায় প্রথম সারির ৪ উইকেট। পরে তরুণ দিপুর সঙ্গে দলের হাল ধরেন মুশফিক। ৫৭ রানের জুটিও গড়েছিলেন এ দুই ব্যাটার। কিন্তু এরপর হুট করেই তালগোল পাকিয়ে ফেলেন মুশফিক। কাইল জেমিসনের বল রক্ষণ করে হাত দিয়ে বল আটকে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়ে যান দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এ ব্যাটার।

টেস্ট ইতিহাসেই এর আগে এমনটা হয়েছে মাত্র সাতবার। বাংলাদেশে তো প্রথমই। মুশফিকের এমন কাণ্ডে হতবাক সবাই। ম্যাচ শেষে অবশ্য মুশফিকের এ কাণ্ডের একটি ব্যাখ্যা দিলেন মিরাজ, ‘এটা তো ইচ্ছাকৃত হয় না। এটা খেলার ফ্লোতে হয়ে গেছে। জিনিসটা হয় কী, তিনি তো ইচ্ছাকৃত করেননি, কেউ তো জেনেশুনে আউট হয় না। খেলার সিচুয়েশনে ব্যাকআপ মাইন্ডে অনেক কিছু থাকে। ফ্লোতে চলে গেছে। আমার কাছে যেটা মনে হয়। খেলে ফ্লোতে চলে গেছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close