ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৮ নভেম্বর, ২০২৩

কিউইদের চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত শান্তরা

শক্তি ও সামর্থ্যে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞতায় তো কিউইদের টেক্কা দেওয়ার সুযোগ নেই স্বাগতিকদের। তবু ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় নিউজিল্যান্ডকে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মনে করেন, ব্যাটিং-বোলিং মিলে দেশের মাটিতে তারা জেতার মতো দল। ক’দিন আগেই বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলেছে নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডের মতো টেস্টেও দল হিসেবে দুর্দান্ত তারা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ দুই আসরের ফল অন্তত তেমন কথাই বলছে। সর্বশেষ চক্রে পয়েন্ট টেবিলের ছয়ে থেকে শেষ করলেও প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রে নিশ্চিতভাবেই শিরোপা জিততে চাইবে নিউজিল্যান্ড। সাদা পোশাকের লড়াইয়ে উল্টো চিত্র বাংলাদেশের। দুই চক্রের দুটিতেই নয়ে থেকে শেষ করেছে তারা। জয়-পরাজয়ের হিসেবে কিউইদের সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার তো সুযোগই নেই। পরিসংখ্যানে তো বাংলাদেশকে নিয়ে বলার মতো কিছু নেই। এখন পর্যন্ত ১৭ দেখায় ১৩ হারের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় মাত্র একটিতে। নিউজিল্যান্ডকে ভালো দল মানলেও তাদের হারানো সম্ভব বলে মনে করেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড খুবই ভালো দল। টেস্টে অনেক চ্যালেঞ্জিং ও শক্তিশালী। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, স্পিনশক্তি বা ব্যাটিং চিন্তা করলে আমরা অবশ্যই ভালো দল। পরিকল্পনা কাজে লাগালে এ দলকে হারানো সম্ভব।’

টেস্টে চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রে ১৪ টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। যেখানে এ বছর দুটি এবং পরের বছর শান্তদের খেলতে হবে ১২টি ম্যাচ। আগের দুই চক্রে ভালো করতে না পারলেও এবার দেশের মাটিতে জিততে চায় বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে দেশের বাইরে ভালো ক্রিকেট খেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় তারা। এমন লক্ষ্যের কথাই জানিয়েছেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। শান্ত বলেন, ‘অবশ্যই সব মিলিয়ে ১৪টা ম্যাচ খেলব আমরা। এ বছর দুটি, পরবর্তী বছর আরো ১২টি। যে দুই বছরের কথা বললেন অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য টেস্ট ম্যাচগুলো। বিশেষ করে যে খেলাগুলো আমাদের দেশের মাটিতে হবে।’ আমার মনে হয়, এ ম্যাচগুলো আমরা কীভাবে জিততে পারি এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং দল হিসেবে- এটাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। বাইরে গিয়ে আমরা কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি, কীভাবে আরো ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি ওই লক্ষ্যটা আমাদের সবার মাঝে আছে।’

ঘরের মাঠে ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের বরাবরই ভরসা স্পিনে। সাকিব আল হাসান না থাকলেও কিউইদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসানরা। ব্যাটিংয়ে সাকিব, তামিম ইকবাল এবং লিটন দাসের না থাকা নিশ্চিতভাবেই ভোগাবে বাংলাদেশকে। তবু মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হকদের নিয়ে সাহস দেখাচ্ছেন শান্ত। বাঁহাতি এ ব্যাটার মনে করেন, ঘরের মাঠে বাংলাদেশ জেতার মতো দল। শান্ত বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দেশের মাটিতে যে বোলিং অ্যাটাক এবং ব্যাটার আছে আমরা দেশের মাটিতে জেতার মতো দল। আস্তে আস্তে ওই অভ্যাসটা তৈরি করা দরকার।’

বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে শান্তকে নেতৃত্বের জন্য তৈরি করা হচ্ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে তার সেই নেতৃত্বের ছাপ দেখা গেছেন বেশ কয়েকবার। বিশ্বকাপেও সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে দুই ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেন বাঁহাতি ব্যাটার। এবার তার সামনে বড় পরীক্ষা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের ১৩তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হবে শান্তর। এমন উপলক্ষের সামনে আত্মবিশ্বাসের সুর পাওয়া গেল ২৫ পেরোনো ক্রিকেটারের কণ্ঠে। তিনি জানান, দায়িত্ব পেলে সব সংস্করণের নিয়মিত অধিনায়ক হওয়ার জন্য পুরোপুরি তৈরি তিনি। তিন সংস্করণেই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। চোটের কারণে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে তিনি নেই। পারিবারিক কারণে নেই সহ-অধিনায়ক লিটনও। শান্তর ওপর তাই পড়েছে দায়িত্বের ভার। এ ভার তিনি বেশ উপভোগ করেন বলে কথা ও শরীরী ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন শান্ত। গতকাল সোমবার সকালে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুশীলনের পর সংবাদ সম্মেলনে জানান, সব সংস্করণের অধিনায়ক হওয়ার সামর্থ্য আছে তার, ‘অধিনায়ক তো অধিনায়কই। সব সংস্করণের জন্যই, আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে যেটা মনে হয় যে, ওই সামর্থ্য আমার আছে। এটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস।’

সাকিবের অনুপস্থিতিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেন লিটন। নিজেদের খেলা সেই সর্বশেষ টেস্ট বাংলাদেশ জেতে বড় ব্যবধানে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাওয়া সাকিব হয়তো আর খুব বেশিদিন টেস্ট খেলবেন না। আগামীর নেতৃত্বের প্রশ্নও তাই উঠছে। এ ব্যাপারে শান্তর মত, কাউকে যেন দেওয়া হয় লম্বা সময়ের দায়িত্ব, ‘দলের এ অবস্থায় আমার মনে হয়, যে-ই অধিনায়ক হবে, সে যদি লম্বা সময়ের জন্য, তাহলে তার পরিকল্পনা করাটা সুবিধা হবে। সামনে যে-ই আসবে, আমি মনে করি, ও যদি যথেষ্ট সুযোগ পায়, সে অনেক ভালো কিছু করবে এবং তার পরিকল্পনা করতে সুবিধা হবে।’ বিশ্বকাপে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচে সাকিব ছিলেন না। শান্ত সামলান দল। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একটি ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন তিনি। ওই ম্যাচগুলো থেকে অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে শান্তর, ‘নির্দিষ্ট করে কী শিখেছি, বলা মুশকিল।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close