ডা. আমিনুল ইসলাম শেখ

  ১২ জুন, ২০২৪

নাক ডাকা থেকে মুক্তি পেতে

নাক ডাকার সমস্যা রয়েছে অনেকেরই। কারো কারো এই সমস্যা থাকায় আশপাশের মানুষ চরম বিরক্ত হয়। বিষয়টি ঘুমের মধ্যে সাধারণত ব্যক্তি নিজে বুঝতে পারেন না। এই প্রবণতা থাকলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এর ফলে আইকিউ কমার পাশাপাশি স্মৃতিশক্তিও ঝাপসা হতে থাকে। ফলে সমস্যাটি সাধারণভাবে না নিয়ে এর সমাধানের চেষ্টা করা জরুরি।

কেন নাক ডাকে মানুষ : বেশ কিছু কারণে মানুষ নাক ডাকতে পারে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

শরীরের অতিরিক্ত ওজন। গর্ভাবস্থায় মানুষের এই প্রবণতা বেড়ে যায়। বংশগত কারণেও এ সমস্যা হতে পারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে শরীরে চামড়া ঝুলে যায়, পুরু হয় ও গলার কিছু পেশি ফুলে যায়। এ কারণে বয়স্কদের মধ্যে নাক ডাকার প্রবণতা তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। অ্যালার্জি, নাক বন্ধ হওয়া অথবা নাকের ভিন্ন গঠনের কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। অ্যালার্জি বা ঠান্ডার কারণে নাকের ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে না। তখনো নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। মদ্যপান, ধূমপান ও বিশেষ কিছু ওষুধের পাশর্^প্রতিক্রিয়ায় নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। শোয়ার ভঙ্গি সঠিক না হলে কারও কারও নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।

ওজন কমানো : শরীরের অতিরিক্ত ওজন নাক ডাকার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। বাড়তি ওজন নাকের ভেতরে বাতাস চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ করে দেয়। এতে শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচলের সময় শব্দের সৃষ্টি হয়। তাই ওজন কমালে এই সমস্যা থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া সম্ভব।

সঠিকভাবে শোয়া : শোয়ার ভঙ্গি সঠিক না হলেও কারও কারও নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। সোজা ও চিত হয়ে শোয়ার কারণে জিহ্বা ও নরম তালু পেছনের দিকে হেলে যায়। এ কারণে মুখের ভেতরে বাতাস চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে গিয়ে শব্দ তৈরি করে। ডান কাত হয়ে শোয়া এ ক্ষেত্রে খুব ভালো সমাধান। বাঁ কাতে শোয়ার জন্য বুকের ওপর বেশি চাপ পড়তে পারে।

অ্যালকোহল পরিহার : অ্যালকোহলের ক্ষতিকর দিক আমরা সবাই জানি। এটি গ্রহণ শুধু নাক ডাকা নয়, শরীরের বিভিন্ন সমস্যার জন্য দায়ী। অ্যালকোহল শরীরের বিভিন্ন পেশিকে শিথিল করে দেয়। এই শিথিল মাংসপেশিগুলো মুখের ভেতরে জায়গা আটকে দেয়। তাই নাক ডাকার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অ্যালকোহল ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিন।

পর্যাপ্ত ঘুমানো : দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে নাক ডাকা বেড়ে যেতে পারে। তা ছাড়া হঠাৎ যেকোনো সময় শুরুও হতে পারে।

নাক পরিষ্কার রাখা : নাক পরিষ্কার রাখতে হবে। তা না হলে কখনো যারা নাক ডাকে না, তাদেরও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠান্ডার কারণে নাক বন্ধ হয়ে থাকলে শোয়ার আগে গরম পানির ভাপ নিয়ে যথাসম্ভব পরিষ্কার করে ফেলুন।

মেডিটেশন : মেডিটেশন বা ধ্যান শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন সমস্যার অনেক বড় সমাধান। মেডিটেশনের মাধ্যমে অজানা অনেক সমস্যার সমাধানও হতে পারে। এর মাধ্যমে আপনি নাক ডাকা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন। নাক ডাকা খুব দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পরামর্শ দিয়েছেন : শিশুবিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা জেনারেল হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close