অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

  ১০ জুন, ২০২৪

বাজেট প্রতিক্রিয়া

আবাসন খাতে গতি ফেরাতে বাজেটে নীতি সহায়তা দৃশ্যমান

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর মতামত জানিয়ে রিহ্যাবের সংবাদ সম্মেলন

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, নিবন্ধন ব্যয়, স্বল্প ও মধ্যবিত্ত নাগরিকদের জন্য হাউজিং লোন সম্পর্কে তেমন আলোচনা নেই বলে মনে করেন আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের আগে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে দেওয়া বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবিগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ঘোষিত বাজেটের ওপর মতামত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানায় সংগঠনটি। এতে সভাপতিত্ব করেন রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে আবাসন খাতে সরকারের নীতি সহায়তা স্পষ্ট নয় জানিয়ে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আবাসন খাতকে গতিশীল করার জন্য সরকারের যে ধরনের নীতি সহায়তা দরকার ছিল তা বাজেটে দৃশ্যমান নয়। রড, সিমেন্ট, ইটসহ নির্মাণসামগ্রীর বিভিন্ন উপকরণের দাম এখন বাড়তি। বিশ্ববাজারে এসব অনেক পণ্যের দাম কমলেও আমাদের দেশে কমেনি।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকারি সহযোগিতা ছাড়াই বেসরকারি উদ্যোক্তাদের একান্ত চেষ্টায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসা গড়ে ওঠে। নিজের প্রচেষ্টা চলতে থাকে এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখে। দীর্ঘদিন এই খাত ভালো চলছিল কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে অতিমাত্রায় কর আরোপ ও সরকারের নীতি সহায়তার অভাবে ক্রমে দেশের আবাসন খাত মারাত্মক সংকটে পতিত হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, দেশের গৃহায়ন শিল্প প্রতি বছর প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ৪০ লাখ শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল ২ কোটি লোকের খাদ্যের জোগান দিচ্ছে। এভাবেই দেশের উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে।

একইসঙ্গে সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়াকে বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন রিহ্যাব সভাপতি। এ সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে বিনিয়োগ আসবে, সরকারের রাজস্ব বাড়বে। প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ রাখায় সংগঠনটির নেতারা প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, সব নাগরিকের সামর্থ্য এক রকম নয় কিন্তু সবার স্বপ্ন একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই। চাহিদার কারণে অনেক ফ্ল্যাট মালিক পুরাতন ফ্ল্যাট বিক্রি করে নতুন ফ্ল্যাট কিনতে চায়, কেউ বা সেটা অন্য কোনো খাতে বিনিয়োগ করতে চায়। কিন্তু এই পুরাতন ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় নতুন ফ্ল্যাটের সমান হওয়ায় অনেকের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। বাজেট চূড়ান্তভাবে পাস করার আগে ৫ বছরের পুরোনো ফ্ল্যাট ৪ শতাংশ হারে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করার সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে পুনর্বিবেচনার জন্য রিহ্যাবের পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাব তুলে ধরা, সেগুলো হলো ১. জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ব্যয় হ্রাস করা, ২. আবাসন খাতের বর্তমান অবস্থা ও বিশ্বের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় আবাসন ব্যবসায়ীদের আয়কর হ্রাস করা, ৩. সেকেন্ডারি মার্কেট প্রচলন করা, ৪. মধ্যবিত্তদের ফ্ল্যাট ক্রয়ে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ক্রেতা সাধারণকে হোম লোন প্রদানের ব্যবস্থা করা এবং ৫. নির্মাণসামগ্রীর মূল্য হ্রাস করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট-১ সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন এম এ আউয়াল, ভাইস প্রেসিডেন্ট-২ মোহাম্মদ আক্তার বিশ্বাস, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) আবদুর রাজ্জাক, ভাইস প্রেসিডেন্ট হাজী দেলোয়ার হোসেন এবং রিহ্যাব পরিচালক ও প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ লাবিব বিল্লাহ্সহ সংগঠনের অন্য পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close